নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: উচ্চ মাধ্যমিকে শিলিগুড়ির গ্রামীণ এলাকা মুখ রক্ষা করলেও শহরের ফলাফল ফের হতাশ করেছে। শহরের কোনও পরীক্ষার্থী রাজ্যের সম্ভাব্য মেধা তালিকায় স্থান পাননি। এনিয়ে অভিভাবকরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ। তাঁদের একাংশ স্কুলগুলির পঠন-পাঠনের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই অবস্থায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল পর্যালোচনা সভা করতে চলেছে স্কুলগুলি। তারা সেই রিপোর্ট ধরে আগামীর জন্য প্রস্তুতি শুরু করবে বলে খবর।
কয়েক বছরের মতো এবারও শিলিগুড়িতে মাধ্যমিকের ফল সকলকে হতাশ করেছে। কোনও পরীক্ষার্থী রাজ্যের সম্ভাব্য মেধা তালিকায় স্থান পাননি। উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষায় সেই খড়া কেটেছে। এক্ষেত্রে শিলিগুড়ি সহ দার্জিলিং জেলার মুখ রক্ষা করেছে গ্রামীণ এলাকা। বিধাননগরের মুরলিগঞ্জ হাইস্কুলের কলাবিভাগের ছাত্রী মৌসুমি পাল ৪৮৮ নম্বর পেয়ে রাজ্যে দশম স্থান পেয়েছেন। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগরের চিতলঘাটায় তাঁর বাড়ি। কিন্তু, এবারও শহরের পড়ুয়ারা দাগ কাটতে ব্যর্থ।
অভিভাবকদের একাংশ বলছেন, শহরে প্রচুর নামী স্কুল, কোচিং সেন্টারের ছড়াছড়ি থাকলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ফলাফল মোটেই সন্তোষজনক হচ্ছে না। তাঁদের অভিযোগ, স্কুলগুলি ছাত্রছাত্রীদের উপর তেমন নজর দিচ্ছে না। সেজন্যই শহর এলাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে পিছিয়ে পড়ছে।
শহরের নামী স্কুলগুলির মধ্যে শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুল অন্যতম। এই স্কুলের কলা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২৪০ জন পরীক্ষায় বসেন। এতে সফল হয়েছেন ২৩৪ জন। এরমধ্যে ৪৭৭ নম্বর পেয়ে স্কুলের সেরা কলা বিভাগের ছাত্র শুভদীপ চক্রবর্তী। স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, স্কুলে না এসে ছাত্রছাত্রীরা কোচিংয়ে বেশি সময় দিচ্ছে। অন্যান্য পরীক্ষার প্রস্তুতিতে জোর দিচ্ছে। কাজেই, অভিভাবকদের অভিযোগ ঠিক নয়। স্কুলে যত্ন সহকারে ছাত্রদের পড়ানো হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল দত্ত বলেন, আশা করেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় স্থান পাচ্ছি না। এতে খারাপ লাগচ্ছে। এজন্য ১২ মে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনা সভা করব। সেখানকার সিদ্ধান্ত অনুসারে আগামীর জন্য প্রস্তুতি শুরু করব।
শহরের আরএকটি নামী স্কুল শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুল। এবার এই স্কুলের কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগ থেকে ২৫৫ ছাত্রী পরীক্ষায় বসে। তাতে ২৫৩ জন পাশ করেছেন। ৪৭৫নম্বর পেয়ে স্কুলে সেরা হয়েছে কলা বিভাগের ছাত্রী জয়িতা সাহা। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অত্যুহা বাগচী বলেন, সার্বিকভাবে স্কুলের ফলাফল ভালো হলেও মেধা তালিকায় স্থান না মেলায় খারাপ লাগছে। শীঘ্রই ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ নেব। আমাগীতে ফল ভালো হবে বলেই আশা করছি।
এদিকে, শিলিগুড়ি সহ দার্জিলিং জেলায় পাশের হার ৮৯.৬৮ শতাংশ। তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষক নেতা সুপ্রকাশ রায় বলেন, সার্বিকভাবে জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল ভালো হয়েছে। আরও ভালো করার জন্য সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।