• রাজ্যের সেরা দশে বাঁকুড়ার পাঁচ পড়ুয়া
    বর্তমান | ০৮ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: মাধ্যমিকের পর উচ্চ মাধ্যমিকেও বাঁকুড়ার জয়জয়কার। জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষার মেধাতালিকায় জঙ্গলমহলের এই জেলার ছাত্রছাত্রীরা দাপট দেখিয়েছেন। এবারের উচ্চ মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় বাঁকুড়ার পাঁচজন জায়গা পেয়েছেন। ফলে খুশির হাওয়া শিক্ষা মহলে।

    সোনামুখী গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী সৃজিতা ঘোষাল এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৯৪ নম্বর পেয়ে চতুর্থ হয়েছেন। তিনি ইঞ্জিনিয়ার হতে চান। সৃজিতার বাবা ভক্তদাস ঘোষাল শিক্ষকতা করেন। মা সুচিতা ঘোষাল গৃহবধূ। তাঁদের বাড়ি সোনামুখী শহরের রানিরবাজারে। সৃজিতা বলেন, আমি বাঁধাধরা নিয়মে পড়াশোনা করিনি। তবে যখন যা পড়েছি, তা খুঁটিয়ে ও মনোযোগ সহকারে পড়েছি। অবসর সময়ে ছবি আঁকতে ভালোবাসি। 

    বাঁকুড়া শহরের বঙ্গ বিদ্যালয়ের ছাত্র অয়ন কুণ্ডু ৪৯২ নম্বর পেয়েছেন। তিনি মেধাতালিকায় ষষ্ঠ স্থান দখল করেছেন। অয়নের বাবা অসিতকুমার কুণ্ডু পেশায় শিক্ষক। মা চামেলি কুণ্ডু গৃহবধূ। তাঁদের আদি বাড়ি ওন্দা থানার মৌদি গ্রামে। অয়নরা বর্তমানে বাঁকুড়া শহরের রামপুর মিশ্রপাড়ায় থাকেন। অয়ন মাধ্যমিকে মাত্র ২ নম্বরের জন্য মেধাতালিকায় জায়গা পাননি। এবার অবশ্য তিনি সেই খেদ মিটিয়ে নিতে পেরেছেন। ওই কৃতী আইআইটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চান। অয়ন বলেন, বিরাট কোহলি আমার প্রিয় ক্রিকেটার। আমি নিয়মিত টিভিতে খেলা দেখি। পাশাপাশি ক্রিকেট খেলিও। নিয়মিত পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়েছি।

    ইন্দপুরের ভেদুয়াশোল হাইস্কুলের ছাত্রী শিল্পা গোস্বামী ৪৯১ পেয়ে সপ্তম স্থান দখল করেছেন। ওই কৃতী কলাবিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে বসেছিলেন। তিনি শিক্ষিকা হতে চান। ইন্দপুরেরই বৃন্দাবনপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি। তিনি প্রতিদিন সাইকেলে চেপে বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের স্কুলে যেতেন। শিল্পার বাবা বিধান গোস্বামী ভিলেজ রিসোর্স পার্সন হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। মা শম্পা গোস্বামী গৃহবধূ। ওই কৃতী মাধ্যমিকেও ভালো ফল করেছিলেন। শিল্পা বলেন, দৈনিক বাঁধাধরা নিয়মে পড়াশোনা করিনি। যখন ভালো লাগত, তখনই পড়তে বসতাম। প্রতিদিন স্কুলে যেতাম। অবসর সময়ে গান শিখি ও ছবি আঁকি।

    বঙ্গ বিদ্যালয়ের ছাত্র দেবজিৎ রায় ৪৯০ পেয়ে অষ্টম স্থান দখল করেছেন। মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় ওই কৃতী দশম স্থানে ছিলেন। দেবজিতের বাবা চিন্তাহরণ রায় সিআরপিএফে কর্মরত। মা সুজাতা রায় গৃহবধূ। তাঁদের আদি বাড়ি হীড়বাঁধের দিগতোড় গ্রামে। তাঁরা বর্তমানে বাঁকুড়া শহরের নতুনচটিতে থাকেন। দেবজিৎ চিকিৎসক হতে চান। তিনি বলেন, আমি অবসর সময়ে গিটার বাজাই। প্রতিটি বিষয়ে গৃহশিক্ষক ছিল। পাশাপাশি একটি কোচিং সেন্টারেও পড়তাম। 

    বাঁকুড়া জেলা স্কুলের ছাত্র ঋতম মান্নাও অষ্টম স্থান দখল করেছেন। তাঁর আদি বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে। ঋতমের বাবা মঙ্গল মান্না বারিকুল থানায় সাব ইন্সপেক্টর হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। মা তাপসী মান্না গৃহবধূ। বাবার কর্মসূত্রে ঋতম বাঁকুড়া পুলিস লাইনের আবাসনে থাকেন। ওই কৃতী চিকিৎসক হতে চান। ঋতম বলেন, অবসর সময়ে গান শুনতে ও গল্পের বই পড়তে ভালো লাগে। সময় পেলে ক্রিকেটও খেলি। মাধ্যমিকে মাত্র চার নম্বরের জন্য আমি মেধাতালিকায় জায়গা পাইনি। এবার মেধাতালিকায় স্থান পেয়ে খুবই ভালো লাগছে।
  • Link to this news (বর্তমান)