নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদ সফর শেষ। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ বহরমপুরের সার্কিট হাউস ছেড়ে বেরল মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। উল্টোদিকেই ব্যারাক স্কোয়ার ময়দান। সেখান থেকেই হেলিকপ্টারে উঠবেন। রাস্তায় তখন তাঁকে বিদায় জানাতে হাজির হয়েছেন জেলার নেতারা। ছিলেন জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ খলিলুর রহমান, বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক অপূর্ব সরকার (ডেভিড), বিধায়ক নিয়ামত শেখ, শমিক হোসেন, মহম্মদ আলি প্রমুখ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের দেখেই গাড়ির জানলার কাচ নামিয়ে দিলেন। তারপর মিনিট খানেকের কথা। তখনই দিলেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু বার্তা। বললেন, ‘সবাইকে একসঙ্গে চলতে হবে। জেলায় শান্তি রক্ষা করতে হবে। সকলে মিলেমিশে কাজ করুন। কোথাও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে দেবেন না।’ সার্কিট হাউসের উল্টোদিকের গান্ধী কলোনির বাচ্চাদের কুলফি খেতে দশ হাজার টাকা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
খলিলুর রহমান বললেন, সামশেরগঞ্জ ও ধুলিয়ানে অশান্তির সময়ে বার বার মুখ্যমন্ত্রী আমাদের থেকে খবর নিয়েছেন। উনি জেলা সফরে এসেছিলেন দুর্গত মানুষের সঙ্গে কথা বলতে। সকলের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দিয়েছেন। এরকম ঘটনা যাতে না ঘটে, সেটা দেখার জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা তাঁর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। সম্প্রীতির সঙ্গে এই জেলায় আমরা সকলে মিলে বসবাস করব। হানাহানি, সন্ত্রাস আমাদের সকলে মিলে রুখতে হবে। অপূর্ববাবু বলেন, সকলে মিলেমিশে কাজ করার জন্য বার্তা দিয়েছেন নেত্রী। সেই সঙ্গে জেলায় যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা না হয় এবং সর্বদা শান্তি বজায় থাকে সেটা আমাদের সকলকে দেখতে বলেছেন। পুলিস ও প্রশাসন অত্যন্ত সক্রিয়। আমরা তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। এই যুদ্ধের আবহে আমরা সকলেই দেশের সঙ্গে আছি। দিদিও কলকাতায় যাওয়ার আগে আমাদের সেই বার্তা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সার্কিট হাউস থেকে গাড়ি নিয়ে বের হতেই, উল্টো দিকের গান্ধী কলোনির কিছু কচিকাঁচা ‘দিদি দিদি’ বলে ডাকতে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থামিয়ে বাচ্চাদের কাছে ডেকে নেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কে কোন ক্লাসে পড়ে, বাড়িতে কে কে আছে, এসব খবর নেন। বাচ্চাদের বলেন, একজন বড় কাউকে ডাকতে। বাচ্চারা গিয়ে সুচিত্রা হাজরাকে ডেকে আনে। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দিয়ে বলেন, বাচ্চাদের কুলফি কিনে দিতে। মুখ্যমন্ত্রীর থেকে কুলফি পেয়ে বেজায় খুশি কচিকাঁচারা। যদিও সুচিত্রা দেবীর আক্ষেপ, আমি তো বুঝতেই পারিনি। হঠাৎ করে মুখ্যমন্ত্রী এভাবে টাকা দেবেন। বাচ্চাদের কুলফি খাওয়ার জন্য টাকা দিয়েছেন। আমি সবার মধ্যে সেই টাকা ভাগ করে দিয়েছি। আগে জানলে আমিও দিদির কাছে কিছু আবদার করতাম! -নিজস্ব চিত্র