নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: রাজ্যের সেরা দশের মেধা তালিকায় বীরভূম জেলার পাঁচজন পরীক্ষার্থী স্থান করে নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ আইএএস, কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হতে চান। মাধ্যমিকের তুলনায় জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল ভালো হয়েছে বলে শিক্ষকদের দাবি। উচ্চ মাধ্যমিকে জেলার পাশের হার ৯১.২৪ শতাংশ। রাজ্যের মধ্যে এই জেলা দশম স্থানে রয়েছে। বুধবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল ঘোষণার পর মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া পড়ুয়াদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত স্কুলের শিক্ষক থেকে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা।
বীরভূম জেলা থেকে যুগ্মভাবে ষষ্ঠ হয়েছেন দুই ছাত্র। ৪৯২নম্বর পেয়ে সাঁইথিয়া টাউন হাইস্কুলের ছাত্র চয়ন দাস কবিরাজ ও শান্তিনিকেতনের নবনালন্দ হাইস্কুলের ছাত্র পরন্তপ মুখোপাধ্যায় রাজ্যে ষষ্ঠ হয়েছেন। জেলার নিরিখে এই দুই পরীক্ষার্থী প্রথম স্থানে রয়েছেন। ৪৯০নম্বর পেয়ে অষ্টম স্থান অধিকার করেছেন শান্তিনিকেতনের ওই স্কুলের আর এক ছাত্র অনুভব মণ্ডল। নবম হয়েছেন রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভনের ছাত্র নাজফার রহমান। তিনি ৪৮৯নম্বর পেয়েছেন। ৪৮৮নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় দশম স্থানে রয়েছেন বোলপুরের নিচুপট্টি নীরদবরণী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র দীপ অধিকারী।
রাজ্যের মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থানাধিকারী সাঁইথিয়া পুরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা চয়ন। ডাক্তার হওয়াই স্বপ্ন তাঁর। স্বপ্ন সফল করতে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিটের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। চয়ন বলেন, মাধ্যমিকে জীবন বিজ্ঞানে ফল ভালো না হওয়ায় রাজ্যের সেরা দশের মেধা তালিকায় স্থান মেলেনি। উচ্চ মাধ্যমিকে সেই আক্ষেপের ঘুচল। গ্রামীণ এলাকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ। সেকারণে ডাক্তার হতে চাই।
চয়নের বাবা কৃষ্ণকান্ত দাস কবিরাজ পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার। মা মৌসোনা দাস কবিরাজ সাঁইথিয়ার একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা। কৃষ্ণকান্তবাবু বলেন, ছোট থেকেই পড়াশোনায় ছেলের খুব আগ্রহ রয়েছে। ওকে কখনও পড়াশোনা নিয়ে চাপ দিতাম না। নিজের মতো করে পড়াশোনা করত। ওর ফলাফলে আমরা খুব খুশি। চয়নের ফলাফলে খুশি সাঁইথিয়া টাউন হাইস্কুলের শিক্ষকরাও।
বোলপুরের রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা পরন্তপ শিক্ষক হতে চান। রাজ্যে অষ্টম স্থানাধিকারী অনুভব বিশ্বভারতীর শ্রীনিকেতন সংলগ্ন জীবনকৃষ্ণ পল্লির বাসিন্দা। বিজ্ঞান বিভাগের এই ছাত্রও চিকিৎসক হতে চান। তবে নবম স্থানাধিকারী রামপুরহাটের কুসুম্বা পঞ্চায়েতের শান্তিপাড়ার নাজফার আইআইটি থেকে ইঞ্জিনিয়ার হতে চান। মেধা তালিকায় দশম স্থানাধিকারী বোলপুরের নায়েকপাড়ার দীপ আইএএস অফিসার হতে চান। উচ্চশিক্ষায় ভূগোল অথবা বিদেশি ভাষা নিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর।
মেধা তালিকায় স্থানাধিকারী সহ সফল পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সুজিত সামন্ত বলেন, পড়ুয়া ও শিক্ষকদের যৌথ প্রচেষ্টায় এই ফলাফল। এর মাধ্যমেই স্পষ্ট, জেলার শিক্ষার মান ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। একইভাবে জেলার উচ্চ মাধ্যমিকের আহ্বায়ক অভিজিত্ নন্দন বলেন, জেলায় পাশের হার যথেষ্ট বেশি। রাজ্যে দশম স্থানে রয়েছে আমাদের জেলা। পাশের হারেই স্পষ্ট শিক্ষাক্ষেত্রে এই জেলা অনেক এগিয়ে রয়েছে। রামপুরহাটের নাজফার রহমানকে মিষ্টিমুখ করাচ্ছেন বাবা-মা। -নিজস্ব চিত্র