মানবতা কমছে, আক্ষেপ কলকাতার প্রথমের, র্যাঙ্ক হবে বিশ্বাস ছিল তথাগতর
বর্তমান | ০৮ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সকাল থেকে সাংবাদিক সম্মেলনে চোখ রেখেছিলেন যাদবপুরের তথাগত রায়। উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম স্থানাধিকারীর প্রাপ্তনম্বর ৪৯৭ শুনেই বুঝে যান মেধা তালিকায় তাঁর জায়গা হয়ে যাবে। সেটাই হল। উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৯০ পেয়ে রাজ্যের মধ্যে অষ্টম আর কলকাতা জেলায় প্রথম স্থান অধিকার করলেন পাঠ ভবনের তথাগত। নামের সুনাম রাখতেই তিনি যেন শান্ত, মৃদুভাষী। মুখে সর্বদই লেগে মৃদু হাসি। ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোর রেজাল্ট বের হোক। তারপর সিদ্ধান্ত নেব।’ সিনেমা, খেলাধুলো তাঁর পছন্দ নয়। ভারতের বিদেশ নীতি নিয়ে কৌতূহল। সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘মানবতা হারিয়ে যাচ্ছে বলেই এত হিংসা।’
স্কুলের শিক্ষিকারা এদিন এসেছিলেন বাড়িতে। বাংলা, ইংরেজির সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিকে ছিল পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, অঙ্ক ও অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে রাশি বিজ্ঞান। মাধ্যমিকে পেয়েছিলেন ৬৭৯। পড়াশোনা নিয়ে বলেন, ‘পরীক্ষার আগে প্রায় ১০ ঘণ্টা পড়তাম। প্রতিটি বিষয়েই ছিল গৃহশিক্ষক।’ তবলাও শিখেছেন তথাগত। তাঁর বড় হয়ে ওঠা সহজ হয়নি। মা সুদেষ্ণা রায় বাঁ হাতে ছবি আঁকেন। ছেলে যখন খুব ছোট মায়ের স্ট্রোক হয়েছিল। শারীরিক জটিলতা আছে। মায়ের বক্তব্য, ‘যেন মানুষের মতো মানুষ হয়। মানুষের জন্য যেন কিছু করতে পারে।’ মাধ্যমিকের পর পাঠ ভবন স্কুলের কাছে তথাগতর পরিবার বেতন মকুবের আবেদন করেছিল। তা মঞ্জুর হয়। কৃতী ছাত্রের দিদিও পাঠ ভবনে পড়তেন। তাঁর বেতনও অর্ধেক করেছিল স্কুল। দিদি সম্পূর্ণা কলেজে পড়েন। বাবা বিমার এজেন্ট। নাম শুভাশিস রায়। তিনি বলেন, ‘তথাগতই ওঁর দিদিকে পড়াশোনায় সাহায্য করত। অঙ্ক, পদার্থ বিজ্ঞান বুঝিয়ে দিত। ক্লাস নাইনে পড়তেই উচু ক্লাসের অঙ্ক করে ফেলত অবলীলায়।’
স্কুলের পোশাক পরে দিদির সঙ্গে স্কুলে গিয়েছিলেন তথাগত। বলেন, ‘বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করকে আমার খুব ভালো লাগে। ওঁর কূটনৈতিক বুদ্ধিতে দেশ এগলে মনে হয় ভালো হবে।’