সাইরেন বেজে উঠতেই ছাউনির নীচে কানে আঙুল দিয়ে শুয়ে পড়ল পড়ুয়ারা, কলকাতা সহ রাজ্যজুড়ে মকড্রিল
বর্তমান | ০৮ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মঙ্গলবারই সরকারি স্তরে ঘোষণা হয়েছিল— মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে চলবে মক ড্রিল। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজেদের রক্ষা করবেন নাগরিকরা? তারই মহড়া চলবে। কিন্তু, মধ্যরাতে অপারেশন সিন্দুর অনেক কিছু বদলে দিয়েছে। তবে কিছুটা ম্রিয়মাণ হলেও যুদ্ধ পরিস্থিতির মহড়া চলে শহর সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল, স্টেশনে। দক্ষিণ কলকাতার চারটি স্কুল, নিউটাউনের একটি স্কুল, শিয়ালদহ স্টেশনের ডিআরএম বিল্ডিং কমপ্লেক্স সহ উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জায়গা চলেছে মক ড্রিল।
এদিন সকালে রানিকুঠির ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলে পড়ুয়াদের নিয়ে চলে মহড়া। উপস্থিত ছিলেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ও শারীরশিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক। প্রথমেই ছাত্রছাত্রীদের বেঞ্চের নীচে লুকোনো শেখানো হয়। কখন লুকোতে হবে? তা বোঝাতে স্কুল কর্তৃপক্ষ ছোট সাইরেনের ব্যবস্থা করে। সেটি বাজানো হয়। শিক্ষকের নির্দেশে সেই সাইরেন শোনা মাত্রই বেঞ্চের তলায় আশ্রয় নেয় পড়ুয়ারা। প্রধান শিক্ষিকার বার্তা— ‘মাঠে থাকলে সাইরেন শোনামাত্র কেউ ইতস্তত ছোটাছুটি করবে না। সবাই ছাউনির নীচে গিয়ে কানে আঙুল দিয়ে শুয়ে পড়বে। তাহলেই তোমরা অনেকটাই নিরাপদ।’ একইভাবে লা মার্টিনিয়ার বয়েজ ও গার্লস স্কুলে মহড়া চলে। সেখানেও সব ছাত্র, ছাত্রীদের ফাঁকা মাঠে বের করে চলে যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রস্তুতি। দিল্লি পাবলিক স্কুল, রুবি ব্রাঞ্চেও একইভাবে পড়ুয়াদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেন শিক্ষকরা।
অন্যদিকে, রেলের তরফে শিয়ালদহ ডিআরএম বিল্ডিংয়ের স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও কোলাঘাট রেল স্টেশনে চলেছে মক ড্রিল। আহত ব্যক্তিদের কীভাবে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিতে হবে— সেই প্রশিক্ষণ চলে রেলের তরফে। কাঁধে করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে জখম নাগরিকদের স্থানান্তরের মহড়া চলে। এদিকে, হাওড়ায় ইস্টার্ন রেলওয়ে সিভিল ডিফেন্সের তরফে বুধবার বিকেলে হাওড়ার গোলমোহর মাঠে মক ড্রিল আয়োজন করা হয়। আগুন লাগলে দ্রুত কীভাবে নেভানো যাবে, তা হাতে কলমে প্রদর্শিত হয়। পাশাপাশি আপৎকালীন পরিস্থিতিতে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়ে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা, আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলিকে মক ড্রিলের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। এদিন সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি স্টেশনে মক ড্রিল হয়। সন্ধ্যা ৭টায় ১০ মিনিটের জন্য স্টেশনের সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়। ব্ল্যাক আউটের কিছুক্ষণ আগে এ ব্যাপারে স্টেশনে অপেক্ষারত যাত্রীদের উদ্দেশে মাইকিং করে আরপিএফ কর্তৃপক্ষ। কেউ যাতে প্যানিক না করেন, সে ব্যাপারেও বলা হয়। ব্ল্যাক আউটের আগে দার্জিলিং মেল জলপাইগুড়ি স্টেশনে এলে বিশেষ তল্লাশি চালানো ওই ট্রেনে।
এদিকে ব্ল্যাক আউটের জেরে রানিনগর স্টেশনে নিউ জলপাইগুড়ি-হলদিবাড়ি প্যাসেঞ্জার ট্রেন ১০মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল।