এই সময়: শুধুমাত্র উপসর্গের চিকিৎসা করলে হবে না, সরাসরি রোগটাকেই নির্মূল করতে হবে— ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন সিঁদুর’কে স্যালুট জানিয়েও আসল বিপদকে ধ্বংস করার পরামর্শ দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
পহেলগামের জঙ্গিহানার প্রত্যাঘাত মঙ্গলবার রাতেই দিয়েছে ভারতীয় সেনা। তার প্রেক্ষিতে বুধবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় সেনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘নিয়ন্ত্রিত, নির্দিষ্ট লক্ষ্যে অপারেশন চালানোর জন্য ভারতীয় সেনাকে স্যালুট জানাই। নিয়ন্ত্রণ রেখাকে অতিক্রম না–করে, নিরপরাধ মানুষের জীবনহানি না–করেই সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটিকে ধ্বংস করা হয়েছে। ভারতের বাইরে থেকে যারা বিভেদ ছড়ানোর চেষ্টা করছে, তাদের রুখে দিয়ে দেশের ঐক্যের বলিষ্ঠ ছবি তুলে ধরার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই বলছেন, পহেলগামে যে ভাবে জঙ্গিরা ধর্ম–পরিচয় বেছে বেছে অ–মুসলিমদের টার্গেট করেছে এ বার, তার প্রেক্ষিতে অভিষেকও মনে করেন, জঙ্গিদের শুধু নিকেশ করা হয়, যারা তরুণ–যুবকদের মগজ–ধোলাই করে তাদের সন্ত্রাসের পথে নিয়ে যাচ্ছে, সেই পাকিস্তানকে অবিলম্বে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতেই হবে। তাতে গোটা বিশ্বের কাছে একটা বার্তা যাবে যে, ভারত কখনওই এই ধর্মীয় বিভাজন ও সন্ত্রাসকে মেনে নেবে না।
তবে তাঁর পোস্টে নাম না-করে পাকিস্তানকে ‘সবক’ শেখানোর বার্তা দিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। কোনও দেশ বা নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তির উল্লেখ না-করে অভিষেক লিখেছেন, ‘এরপরেও একটা বিষয় স্পষ্ট করতে চাই, পাগল কুকুরকে (র্যাবিড ডগ) মেরে বিপদ কমবে না, যদি এর ব্রিডার বেঁচে থাকে এবং আরও পাগল কুকুর তৈরি করে। পাগল কুকুরটা আসল সমস্যা নয়, সমস্যা হলো এর হ্যান্ডলার, যারা এই কুকুরদের লালনপালন করে, প্রশিক্ষণ দিয়ে সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য ছেড়ে দেয়। দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য পুরো বিশ্বকেই দাঁড়াতে হবে এবং হিংসার এই প্রশিক্ষণ, মদতদাতার আঁতুরঘরকে গুঁড়িয়ে ফেলতে হবে। উপসর্গের চিকিৎসা বন্ধ করে সরাসরি রোগের চিকিৎসা করার সময় এসেছে এখন।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ অভিষেকের বক্তব্যকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন। কারণ, অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক থেকে সাধারণ নাগরিকদের অনেকেই মনে করেন, পাকিস্তান যে ভাবে বছরের পর বছর ধরে তাদের এলাকায় সন্ত্রাসবাদীদের ক্যাম্প চালানোর জন্য মদত দিয়ে আসছে এবং মাঝেমধ্যেই ভারতে নাশকতায় বারবার উৎসাহ জোগাচ্ছে, তাতে পড়শি ওই দেশকে আরও কঠোর প্রত্যাঘাত করার প্রয়োজন।
যাতে আগামী দিনে তারা আর এই পথে হাঁটতেই ভয় পায়। প্রসঙ্গত, পহেলগামের ঘটনার পরে গোটা দেশ যখন প্রত্যাঘাতের দাবিতে সরব, তখন অভিষেক ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানে ফের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক অথবা পাকিস্তানকে প্রতীকী হুমকি দেওয়ার এখন সময় নয়। যে ভাষা ওরা বোঝে, সেই ভাষায় এখন ওদের শিক্ষা দেওয়া সময় এসেছে। এখন সময় এসেছে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরকে পুনরুদ্ধার করার।’