• মা-বাবা শিক্ষকতায়, কৃতী সন্তানদের পছন্দ অন্য পেশা
    এই সময় | ০৮ মে ২০২৫
  • এই সময়, বর্ধমান: চার জনের মধ্যে তিন জনেরই মা অথবা বাবা, এমনকী দু’জনেই শিক্ষকতার পেশায় রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের কৃতী সন্তানরা কেউই ভবিষ্যতে শিক্ষক হতে চায় না। তাদের কেউ চায় ডাক্তার হতে, কেউ ইঞ্জিনিয়ার। কারও আবার আগ্রহ কম্পিউটার সায়েন্সে।

    মেধাতালিকায় পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম ও দশম স্থানে রয়েছে এই চার কৃতী। উল্লেখ্য, এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম দশের মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার সাত জন ছাত্রছাত্রী। তাদের অন্যতম কাটোয়ার দেবদত্তা মাজি। দু’বছর আগে মাধ্যমিকে প্রথম হওয়ার পরে এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে সে অর্জন করেছে ষষ্ঠ স্থা‍ন।

    মাধ্যমিকে পারেনি, উচ্চ মাধ্যমিকে দেবদত্তাকে পিছনে ফেলে রাজ্যে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে ভাতার মাধব পাবলিক হাই স্কুলের ছাত্র কুন্তল চৌধুরী। সে পেয়েছে ৪৯৩। বলগোনা রেলগেট এলাকার বাসিন্দা কুন্তলের এই সাফল্যে খুশি স্কুল থেকে পরিবারের সবাই। মা ও বাবা দু’জনেই শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। গোয়েন্দা কাহিনী পড়ার সঙ্গে ক্রিকেট খেলতেও ভালোবাসে কুন্তল। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চায় সে।

    উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৯২ পেয়ে যুগ্ম ভাবে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে মেমারি বিদ্যাসাগর স্মৃতি বিদ্যা মন্দিরের (শাখা-১) ছাত্র জয়দীপ পাল। বাবা নিবেদন পাল ছোট ব্যবসায়ী, মা কৃষ্ণা পাল গৃৃহবধূ। জয়দীপের এই সাফল্যে পরিবার থেকে প্রতিবেশী–সহ স্কুলের শিক্ষক–শিক্ষিকারাও খুশি। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন জয়দীপেরও। বলল, ‘আমি খুব বেশি সময় ধরে পড়েছি, এমন নয়। কিন্তু মন দিয়ে পড়েছি। তবে রাজ্যে ষষ্ঠ হব, তা ভাবিনি।’

    মেধাতালিকায় জয়দীপের পরেই রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের আর এক কৃতী ছাত্র শুভম পাল। ৪৯১ নম্বর পেয়ে সে অর্জন করেছে সপ্তম স্থান। বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের একটি আবাসনে থাকে শুভমরা। বাবা সমীর পাল একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী, মাবর্ধমানের একটি গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা। ছ’জন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়েছে শুভম।

    ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছে তার। তবে নিট–এ বসলেও পরীক্ষা খুব ভালো হয়নি। তার বক্তব্য, ‘পড়াশোনায় ফাঁকি দেওয়া যাবে না। এ বার সেমিস্টারে ভাগ হয়ে পরীক্ষা হবে। ফলে প্রত্যেক সেমিস্টারই খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

    নিজের রেজ়াল্টের থেকেও ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বেশি উৎসাহী ও উত্তেজিত বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলের ছাত্র অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪৮৮ পেয়ে মেধাতালিকায় দশম স্থানে রয়েছে তার নাম।

    এ দিন অর্ক বলে, ‘ভারত আজ যে মোক্ষম জবাব দিয়েছে, তার জন্য স্যালুট জানাই আমাদের বীর সেনাবাহিনীর সবাইকে। আমার এই সাফল্য সেই ২৬ জন নিহতকে শ্রদ্ধা জানিয়ে উৎসর্গ করতে চাই। একইসঙ্গে সমবেদনা জানাই তাঁদের পরিবারের সদস্যদের।’

    আগামী দিনে আইআইটি–তে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছা অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায় ও মালবিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একমাত্র সন্তানের। বর্ধমানের গোলাহাট নিমতলার বাসিন্দা অর্কর বাবা বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিক, মা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলের টিচার ইন-চার্জ অরুণাভ চক্রবর্তী বলেন, ‘সত্যিই আমাদের কাছে আজ গর্বের দিন। আমাদের স্কুলের দু’জন কৃতী ছাত্র স্কুলের মুখ উজ্জ্বল করেছে।’

  • Link to this news (এই সময়)