• কয়লা চোরের দলে বাড়ছে শিশুর সংখ্যা, থানার দ্বারস্থ ইসিএল
    এই সময় | ০৮ মে ২০২৫
  • এই সময়, আসানসোল: রয়েছে সিআইএসএফ। রয়েছে ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী। কিন্তু ওই পর্যন্তই! নিরাপত্তার এত ঘেরাটোপ সত্ত্বেও কয়লাখনিগুলিতে মাঝরাত থেকে ভোর পর্যন্ত এক বড় সংখ্যক মহিলা, শিশু এবং কিছু পুরুষ প্রতিনিয়ত কয়লা চুরি করে চলেছে।

    কর্তৃপক্ষের দাবি, এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে যেমন সেই মহিলা–শিশুদের আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে, তেমনই কারখানার মেশিনের ক্ষতি করা হচ্ছে।

    পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে দেখে এ বার পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছে ইসিএল। সংস্থার পূর্ব সিয়ারসোল খোলামুখ খনি কোলিয়ারির ম্যানেজার যশবন্ত কুমার অতুলকর জামুড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রতি রাতে কয়লা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে মহিলা এবং শিশুর দল। তাদের বাধা দিতে গেলে নিরাপত্তাকর্মীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে।

    কোনও সময়ে আবার কারখানার মেশিনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই জাতীয় সম্পত্তি রক্ষা করতে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জামুড়িয়া থানার তরফেও জানানো হয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে এবং তদন্তও শুরু হয়েছে।

    শুধু নর্থ সিয়ারসোল খোলামুখ খনি বলেই নয়, একাধিক অঞ্চলে ইসিএলের খোলামুখ খনিতে মাঝরাতের পর থেকে ভোরবেলা পর্যন্ত কয়লা চুরি হচ্ছে। এমনকী খনির আশপাশে ভিড় জমাচ্ছে প্রচুর মোটরবাইক। গাড়ির পিছনের দিকে লোহার বিশেষ কেরিয়ার তৈরি করে সেখানে তোলা হচ্ছে চুরি করা কয়লা। হিসেব করে দেখা গিয়েছে, একটি মোটরবাইক চার থেকে পাঁচ টন কয়লা এ ভাবে বহন করে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে।

    অবৈধ ভাবে কয়লাচুরির জন্য তৈরি হয়েছে দল। সেখানে মহিলার সংখ্যা বেশি। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে শিশুরাও। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, এই শিশুরা পড়াশোনা ছেড়ে এই চুরির কাজে যোগ দিয়েছে।

    ইসিএলের এক নিরাপত্তা আধিকারিক বলছিলেন, ‘এক বড় অংশের মহিলা এবং পুরুষ এই চুরিতে প্রত্যক্ষ ভাবে অংশ নিচ্ছে। তবে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে, এই চক্রে শিশুরা যুক্ত হওয়ায়। তারা খনি এলাকায় ঢুকে পড়লে আমাদের পক্ষে পাল্টা কিছু করা কঠিন হয়ে পড়ছে। অতীতে বেশ কয়েক বার ওই চক্রকে তাড়া করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয়েছে। শিশুদের এই পেশায় যুক্ত করার প্রবণতা ক্রমশ বাড়ছে। জানি না, এই সঙ্কট থেকে কী ভাবে মুক্তি মিলতে পারে। তাই বাধ্য হয়ে এ বার পুলিশের শরণাপন্ন হতে হয়েছে আমাদের।’

  • Link to this news (এই সময়)