• একমাত্র পরীক্ষার্থীও ব্যর্থ, একাদশে ভর্তি নিয়ে চিন্তা
    এই সময় | ০৮ মে ২০২৫
  • এই সময়, পাঁশকুড়া: তিনজন ছাত্রীর মধ্যে দু’জন উচ্চমাধ্যমিক না দিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিল। তাই স্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল মাত্র একজন। সেই ছাত্রীও পরীক্ষায় অসফল।

    উচ্চমাধ্যমিক স্কুল হলেও পাঁশকুড়ার শ্যামসুন্দরপুর পাটনা কৃষ্ণচরণ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এ বার একজনও উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারল না। স্কুলের ইতিহাসে এ রকম ফলাফল এই প্রথম। ফলে হতাশ স্কুল কর্তৃপক্ষ।

    পাঁশকুড়ার মাইশোরা এলাকার এই স্কুলটি ২০০৯ সালে উচ্চমাধ্যমিকের অনুমোদন পায়। শুধু কলা বিভাগ নিয়ে শুরু হয় উচ্চমাধ্যমিক। টানা প্রায় ১১ বছর বিদ্যালয়ে সফল ভাবে উচ্চমাধ্যমিক বিভাগ চলে। রাজ্যের স্কুলগুলিতে দীর্ঘদিন নিয়োগ না হওয়ায় এবং একাধিক শিক্ষিকা অবসর নেওয়ায় স্কুলে শিক্ষক সঙ্কট দেখা দেয়।

    ২০২০ সালের পরে স্কুলের একাধিক বিষয়ে শূন্যপদ তৈরি হলেও শিক্ষিকা মেলেনি। ২০২৩ সালে এই স্কুল থেকে ৬৪ জন ছাত্রী মাধ্যমিক পাশ করে। তাদের মধ্যে যারা বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়তে চেয়েছিল, তারা পাশের শ্যামসুন্দরপুর পাটনা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যায়।

    বাকিরা যারা কলা বিভাগ নিয়ে নিজের স্কুলেই পড়ার কথা ভেবে রেখেছিল, শিক্ষিকা না থাকায় তারাও পাশের স্কুলে চলে যায়। ৬৪ জনের মধ্যে মাত্র দু’জনকে শিক্ষিকারা বুঝিয়ে একাদশে ভর্তি করান। আর অন্য একটি স্কুলে থেকে এক ছাত্রী এসে ভর্তি হয় কৃষ্ণচরণ বালিকা বিদ্যালয়ে।

    উচ্চ মাধ্যমিকে বাংলা, ইংরেজি–সহ একাধিক বিষয়ে শিক্ষিকা না থাকলেও পার্ট টাইম শিক্ষক ব্যবস্থা করে ক্লাস চালাতে থাকেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তিন ছাত্রীর মধ্যে গত বছর দু’জনের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তারা স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। একজন ছাত্রীকে নিয়েই চলত ক্লাস।

    একমাত্র ছাত্রীকে পাশ করানোর জন্য পাঠদানে এতটুকুও কসুর ছিল না শিক্ষিকাদের। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। বুধবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল ঘোষণার পর কার্যত হতাশ স্কুল কর্তৃপক্ষ। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এই স্কুলের পাঁচ শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হয়। যোগ্য হিসেবে পাঁচজনই আবার ফিরেছেন স্কুলে।

    শিক্ষিকা সঙ্কটের কারণে এই স্কুলে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির ব্যাপারে অনীহা দেখা দিয়েছে ছাত্রীদের মধ্যে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রীতা ঘোষাল বলেন, ‘এ বার স্কুল থেকে একজন ছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছিল। সে অকৃতকার্য হয়েছে। বিদ্যালয়ের মাধ্যমিকের ফলাফল বরাবর ভালো। কিন্তু পাশের কো-এড স্কুলে পড়ার জন্য এখানকার অধিকাংশ ছাত্রী এই স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয় না। এটা খুবই দুর্ভাগ্যের ও চিন্তার।’

  • Link to this news (এই সময়)