• পর্যটকদের দার্জিলিং চেনাতে ‘হেরিটেজ ওয়াক’ জিটিএ-র
    এই সময় | ০৮ মে ২০২৫
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: পাহাড়ে পর্যটন মরশুম শুরু হতেই যানজটে নাজেহাল হচ্ছেন পর্যটকরা। ঘুম থেকে দার্জিলিংয়ে পৌঁছতে অন্তত দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। হোটেলে পৌঁছে কোনও রকমে একটু ম্যালে হাওয়া খাওয়ার পরে চিড়িয়াখানা, টয় ট্রেন আর টাইগার হিল বুড়ি ছোঁয়ার মতো ঘুরেই ফিরতি জিপে চড়ে বসতে হচ্ছে।

    লোকাল সাইট সিয়িং করতে গেলে পাঁচ ঘণ্টার জার্নিতে তিন থেকে চার ঘণ্টা স্রেফ যানজটেই আটকে থাকতে হচ্ছে। আসল দার্জিলিংয়ের স্বাদ পাচ্ছেন না পর্যটকরা। অথচ ‘কার্বন ফুটপ্রিন্ট’ প্রতিদিন বাড়ছে।

    দার্জিলিংয়ের পর্যটনে বসন্ত আনতে তাই হেরিটেজ ওয়াক শুরু করছে জিটিএ। পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি পর্যটকদের আসল দার্জিলিং চেনাবে এই হেরিটেজ ওয়ার্ক। চার জনের একটি দল জিটিএ পর্যটনের দপ্তরে গিয়ে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করলেই হলো। নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছে যাবেন গাইড।

    তার পরে হাঁটতে হাঁটতে শৈলরানিকে চেনার পালা। জিটিএ কয়েকটি থিমের উপরে এই হেরিটেজ ওয়াকের ব্যবস্থা করেছে। চার জনের একটি দল পিছু একজন করে গাইড। যে কোনও একটা থিমের উপরে গাইড বুক করলেই হলো।

    হাঁটতে হাঁটতে গাইডও পর্যটককে চিনিয়ে দেবে দেশবন্ধুর বাড়ি। কোথায় থাকতেন সেই সময়ের নামী আইনজীবী শরৎচন্দ্র দাস। কলোনিয়াল দার্জিলিংয়ের ছোঁয়া এখনও কোথায় গেলে মিলবে। কোচবিহার মহারাজার বাড়িটা ঠিক কোথায় ছিল। বর্ধমান রাজ পরিবারের বাড়িটাই বা ঠিক কোথায়?

    আপাতত ২৪ জন গাইডের প্রশিক্ষণ শেষে ট্রায়াল চলছে। পর্যটকদের একেবারে বিনামূল্যে দার্জিলিং চেনাচ্ছেন গাইডরা। জুলাই মাসে গাইডদের অ্যাডভান্সড ট্রেনিং হবে। পুজোর মরশুমে ফি দিয়ে এই হেরিটেজ ওয়াক করতে হবে পর্যটকদের। খরচ পড়বে ছ’শো থেকে এক হাজার টাকা।

    জিটিএর অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের কোঅর্ডিনেটর দাওয়া গিয়াৎসো শেরপা বলেন, ‘যানজটের জেরে পর্যটকেরা দার্জিলিংয়ে আর শান্তিতে ঘুরতে পারছেন না। এই জন্যই এই হেরিটেজ ওয়াকের ভাবনা। আপাতত গাইডদের প্রথম পর্বের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। জুলাইয়ে অ্যাডভান্সড ট্রেনিংয়ের পরে হয়তো ফি নেওয়া হবে।’

    দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি একই রকমের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে কালিম্পংয়েও। আপাতত গাইড বাছাইয়ের কাজ চলছে। জিটিএ-কে এই পরিকল্পনায় সহায়তা করছে 'দার্জিলিং ওয়াকস' নামে একটি সংগঠন এবং অ্যাসোসিয়েশন অফ কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম (অ্যাক্ট)। সংস্থার কর্ণধার রাজ বসু বলেন, ‘দার্জিলিংয়ের পর্যটন এখন যে জায়গায় পৌঁছেছে হেরিটেজ ওয়াকের মতো বিকল্প চিন্তাভাবনা ছাড়া আর এগোনো সম্ভব নয়।’

  • Link to this news (এই সময়)