এই সময়, কৃষ্ণনগর: কিছু দিন আগেই সন্তানহারা পিতার আর্তনাদ আর হাহাকার শুনেছিল নদিয়ার তেহট্ট থানার পাথরঘাটা গ্রাম। পহেলগামের ঘটনার পরেই কাশ্মীরের উধমপুরে পাক জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে শহিদ হন সে গ্রামের বাসিন্দা ভারতীয় সেনা জওয়ান ঝন্টু আলি শেখ। তাঁর বাবা সবুর শেখ অপারেশন সিঁদুরের কথা শুনে বুধবার বলে উঠলেন, ‘এ বার কবরে শান্তি পাবে আমার ছোট ছেলে।’
এ দিন সকাল থেকে পুরো পরিবার চোখ রেখেছিল টিভির পর্দায়। অপারেশন সিঁদুর খানিক যেন সান্ত্বনা দিয়েছে স্বজনহারা পরিবারের সদস্যদের। ঝন্টু স্ত্রী শাহনাজ পারভিন এবং দুই নাবালক ছেলেমেয়ে বুধবার সকাল থেকে ঠায় টিভির দিকে তাকিয়েছিলেন দিনভর। দেখেছেন ঝন্টুর মৃত্যুর প্রতিশোধের ছবি। তবে এ নিয়ে তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
ঝন্টুর দাদা ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি টিমের সুবেদার রফিকুল শেখ বলেন, ‘সাতসকালে কাশ্মীরে আমার এক সহকর্মী ফোনে জানায়, তোর শহিদ ভাইয়ের বদলা নেওয়া হয়ে গিয়েছে। তারপর থেকে বলতে গেলে সারাদিনই টিভির পর্দায় চোখ রেখে আমাদের সেনা অভিযানের নানা খবর দেখেছি। কখনও চোখ রেখেছি সোশ্যাল মিডিয়াতেও। খুবই খুশি আমি। আমাদের পরিবার খুশি, গ্রামবাসীরা খুশি, বাংলার মানুষ খুশি, গোটা দেশের মানুষও খুশি।’
তবে শুধু ব্যক্তিগত প্রতিশোধ হিসেবে একে দেখছেন না রফিকুল। তৃপ্তির হাসি হেসে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, ‘শুধু আমার ভাইয়ের খুনের বদলা নয়, পহেলগামে ২৬ জন নিরীহ পর্যটককে খুনের বদলাও হলো। আমি প্রথম থেকেই বলে এসেছি, ভারতীয় সেনার ওপরে ভরসা রাখতে। ভারতীয় সেনা উচিত জবাব দিতে জানে। সে কথা এর মধ্যেই সত্যি হয়েছে।’
ঝন্টু শহিদ হওয়ার পরে বাড়ি ফিরেছিলেন রফিকুল। ঝন্টুর কাগজপত্র নিয়ে ব্যাঙ্কে ছোটাছুটি করছেন কয়েক দিন ধরে। শোকসন্তপ্ত বৃদ্ধ বাবাকে সামলাতে হচ্ছে। কাজে ফেরা প্রসঙ্গে বললেন, ‘বাহিনী থেকে যখনই আমাকে ডেকে পাঠাবে, একটুও দেরি না করে কাজে যোগ দেব। সেনা আমার ভাইয়ের বদলা নিয়েছে। আমাকে নিজের হাতেও তো বদলা নিতে হবে!’