‘কেউ কালোবাজারি করলে সরকার সব বাজেয়াপ্ত করবে’, কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৮ মে ২০২৫
যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’ করে পহেলগাঁও হামলার যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারত। পাকিস্তানও তলে তলে পাল্টা হামলা করার ছক কষছে। সুতরাং যুদ্ধ লেগে যেতে পারে। আর তার ফলে দাম বাড়তে পারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের। লাগাছাড়া দামের জেরে নাভিশ্বাস উঠতে পারে মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নমধ্য়বিত্ত শ্রেণি মানুষজনের। কারণ এই মওকায় একশ্রেণির অসাধু ব্য়বসায়ীরা কৃত্রিম অভাব তৈরি করে অতিরিক্ত টাকাকড়ি লাভ করতে চেষ্টা করবে। এই নিয়ে এবার কড়া দাওয়াই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ, বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে বৈঠক করেন ব্যবসায়ী এবং টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে। আর সেখানেই শাক–সবজি–মাছের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আলু, পেঁয়াজের দাম যেন আর না বাড়ে। গতবছর থেকে এখন দাম কম আছে। কিন্তু আদার দাম এত বেশি কেন? আদা আমরা উৎপাদন করতে কি পারি না? সেই জায়গা দেখা হোক। সুফল বাংলা ভাল কাজ করছে। আরও ১০০ আউটলেট হবে। বাজারের থেকে কম দামে সুফল বাংলা দিচ্ছে সবজি। কিন্তু বাজারে যেন দাম না বাড়ে এটা দেখতে হবে। শশার দাম বাড়ছে কেন? সেটা ভাল করে দেখতে হবে।’
রাজ্য সরকারের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে একটি টাস্ক ফোর্স আছে। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকের পরই আজকের বৈঠকে যোগ দিতে টাস্ক ফোর্স সদস্যরা তৎপর হয়ে ওঠে। একাধিক ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে ছিলেন। প্রশাসন এবং পুলিশের শীর্ষকর্তারা এই বৈঠকে ছিলেন। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউ যেন কালোবাজারি না করে। বেশি টাকার লোভে যেন সীমান্ত পেরিয়ে সবজি না যেতে পারে। হিমঘরে যে পরিমাণ আলু আছে তা চাহিদার থেকে অনেক বেশি। মুরগির মাংসের দাম বেশি আছে। হাঁসের মাংস পাওয়ার জন্য পোলট্রি করে দিয়েছি। সেই মাংস যাচ্ছে কোথায়? সেই মাংস বাজারে নিয়ে আসুন। প্রতিযোগিতা নিয়ে এলে তবেই দাম কমবে।’
দেশের এই গৌরবের মুহূর্তে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী যুদ্ধের জিগির তুলে অত্যাবশ্যকীয় নানা পণ্য, খাদ্যসামগ্রীর দাম বাড়িয়ে মোটা মুনাফা করার চেষ্টা করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘এই বছর আরও ১৩০০ পেঁয়াজ গোলা নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছি। সুফল বাংলা বিক্রি করবে। মাছ মাংসের দামটা কমাতে হবে। মাছের দাম কেন কমছে না? মাছ উৎপাদন যেভাবে করা উচিত ছিল সেভাবে কাজ করছে না। আড়াই বছরে কি করেছেন? আমাকে বিস্তারিত জানান। যখন কোনও বদলির নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে তখন তাতে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। চোখ থাকতেও তাকিয়ে দেখেন না। পলিসি হবার পরে ডিএমরা কি করছে? সেটা দেখতে হবে। সরকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে কেন তা করা হচ্ছে না? সাতদিনের মধ্যে রিপোর্ট চাই।’
তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে দাম স্বাভাবিক নাও থাকতে পারে। সাধারণ মানুষ তখন বিপদে পড়বেন। সেটা যাতে না হয় তাই এই জরুরি বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, ‘অনেক জায়গায় সুফল বাংলার আউটলেটে মাছ বিক্রি হয় সুলভে। মাছও সুফল বাংলায় বিক্রি করতে হবে। জোগান দেওয়ার দায়িত্ব মৎস্য দফতরের। যার কোটি কোটি টাকা আছে তাদের কোনও সমস্যা হয় না। গরিব মানুষ মধ্যবিত্ত মানুষ কোথায় যাবে? তাদের জন্য ব্যবস্থা করতে হবে। কেউ কালোবাজারি করলে সরকার সব বাজেয়াপ্ত করবে। তার জন্য টাস্ক ফোর্সকে নজরদারি করতে হবে। পরের বছর নির্বাচন আছে বলে দাম বাড়িয়ে দিলেন সেটা আমরা বরদাস্ত করব না।’