রবীন্দ্রজয়ন্তীতে নয়া ভাবনায় সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের ডাক সিপিএমের, ভোট কি বাড়বে?
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৮ মে ২০২৫
রাত পোহালেই রাজ্যজুড়ে পালিত হবে রবীন্দ্রজয়ন্তী। শহর–শহরতলি থেকে গ্রামবাংলা নানা জায়গায় সাড়ম্বরে পালিত হবে বিশ্বকবির জন্মদিন। আর এটাকেই এবার হাতিয়ার করতে চাইছে সিপিএম। যেমন— আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনায় প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন বহু মানুষ। তখন সংহতি জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে পড়েছিল সিপিএম এবং বাম দলগুলি। উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনে ফায়দা কোলার। কিন্তু উপনির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেল, ভোটবাক্স শূন্য। এবারও কবিগুরুর জন্মজয়ন্তীকে কাজে লাগিয়ে সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইছে। কিন্তু তাতে কি ভোট বাড়বে? প্রশ্ন দলের অন্দরেই।
আরজি কর হাসপাতালের আন্দোলনের কোনও প্রভাবই ভোটবাক্সে পড়েনি। কিন্তু তাতে দমে যেতে রাজি নন সিপিএম নেতারা। এখন যা পরিস্থিতি তাতে দেশজুড়ে বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে বার্তা দিতে চায় সিপিএম। আর তাই সিপিএম এখন রবীন্দ্রজয়ন্তীতে রবীন্দ্রনাথ–নজরুলের ভাবনায় সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের ডাক দিচ্ছে। সদ্য মুর্শিদাবাদ জেলায় হিংসায় তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাতাবরণ। সেই ইস্যুকেও কাজে লাগাতে চায় বঙ্গ সিপিএম। ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভেদ বিভাজনের বিরুদ্ধে এক জোট হতে চাইছে সিপিএম। আর সেটাকেই রাজনীতির ময়দান থেকে নির্বাচনের বাক্সে নিয়ে যেতে চায় লালপার্টি।
২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন আছে। সেখানে শূন্যের গেরো কাটাতে চায় সিপিএম। আর তাই রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথ–নজরুলের ভাবনায় সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইছে সিপিএম। এই কারণে সবস্তরের মানুষজনকে একসঙ্গে নানা কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এই উদ্যোগটি ভাল হলেও সুদূরপ্রসারি লাভ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান দলের বহু কমরেডরা। আর তাঁদের একাংশের প্রশ্ন, সবাই মিলে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করলে কি ভোট বাড়বে? শূন্যতা কি কাটবে? কারণ, আরজি কর হাসপাতালের ইস্যুকে নিয়ে রাস্তায় নেমে কোনও লাভ হয়নি।
পূর্ব অভিজ্ঞতা ভাল না থাকায় রবীন্দ্রনাথ–নজরুলের ভাবনায় সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মতভেদ তৈরি হয়েছে। একদা এই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেই ‘বুর্জোয়া কবি’ বলতেন কমরেডরা। এখন কলকাতার নানা প্রান্তে সাংস্কৃতিক মঞ্চ তৈরি করে বামপন্থীরা রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনের ডাক দিয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সিপিএমের এক নেতা বলেন, ‘রবীন্দ্রজয়ন্তী সর্বত্র নানাভাবে পালিত হয়। আমরা যতটা সম্ভব একসঙ্গে সেটা করার চেষ্টা করছি। সেখানে কিছু অবামপন্থী লোকও থাকতে পারেন। উদ্দেশ্য এককাট্টা হয়েই থাকতে হবে। ভোটের ক্ষেত্রে আরও অনেক ইস্যু থাকে। এই কর্মসূচির জেরে ভোটের উপর তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না।’