• মমতাই শত্রু, দিলীপের আচরণ মতাদর্শ ও শৃঙ্খলাবিরোধী,বৈঠকে স্পষ্ট জানাল BJP নেতৃত্ব
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৮ মে ২০২৫
  • দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে কি কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে বিজেপি? রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্যে সেই প্রশ্ন নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বুধবার কলকাতায় রাজ্য বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে দেখা যায়নি দিলীপবাবুকে। এর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুকান্তবাবু বলেন, দিলীপ ঘোষকে নিয়ে অবস্থান জানতে পারবেন, জানিয়ে দেব। এমনকী এদিনের বৈঠকে দিলীপ ঘোষের আচরণ দলের শৃঙ্খলাবিরোধী বলেও জানানো হয়েছে। স্পষ্ট করা হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই মূল প্রতিপক্ষ। বিজেপির লড়াই তাঁর বিরুদ্ধেই।

    গত ৩০ এপ্রিল দিঘায় রাজ্য সরকারের তৈরি জগন্নাথ ধাম কালচারাল সেন্টারের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন সেখানে সস্ত্রীক হাজির হন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গোটা চত্বর পরিদর্শনের পাশাপাশি পুজো দেন তিনি। এর পর দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। মমতার সঙ্গে দিলীপবাবুর সেই সহাস্য সাক্ষাতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় বিজেপির অন্দরে। দিলীপবাবুর সঙ্গে বিবৃতিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন একাধিক বিজেপি নেতা। কয়েকটি ক্ষেত্রে সেই বিতণ্ডা ব্যক্তিগত স্তরে নেমে যায়। দিন কয়েক পরেই যদিও পুরনো ফর্মে ফিরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সরকারকে তুমুল আক্রমণ করেন দিলীপবাবু। তবে তাতেও বরফ যে গলেনি তা স্পষ্ট হয়ে যায় বুধবার রাজ্য বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে দিলীপ ঘোষ ডাক না পাওয়ায়।

    এদিন দলীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপবাবুর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন এড়ানোর চেষ্টা করেন সুকান্তবাবু। কিন্তু বারবার প্রশ্নের মুখে তিনি বলেন, দিলীপ ঘোষকে নিয়ে অবস্থান জানতে পারবেন, জানিয়ে দেব।

    সুকান্তবাবুর কথায় স্পষ্ট, দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে চলেছে বিজেপি। সূত্রের খবর, দিলীপ ঘোষের কাণ্ড কারখানায় যথেষ্ট বিরক্ত রাজ্য বিজেপির নেতারা। তাঁর নামে দিল্লিতে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। জগন্নাথ ধাম কালচারাল সেন্টার দর্শনে গেলে তবু ঠিক ছিল, কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে খোসগল্প জুড়েছেন তাতে নীচুতলার কর্মীদের ওপর প্রভাব পড়েছে। একদিকে যখন মমতা বিরোধিতাকে চরমে তুলে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের চেষ্টায় রয়েছে বিজেপি তখন দিলীপবাবুর এই পদক্ষেপে সেই পরিকল্পনা ধাক্কা খেয়েছে বলেও মত অনেকের।

    শুধু তাই নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পর নাম করে বা না করে যে ভাবে তিনি দলের নেতাকর্মীদের আক্রমণ করেছেন তাও ভালোভাবে নেয়নি দল। বিশেষ করে দলে নবাগতদের যে ভাবে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ আক্রমণ করেছেন তাতে দলের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। দিলীপের এই আচরণ দলের মতাদর্শ ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী বলে উল্লেখ করা হয়েছে বুধবারের বৈঠকে। সঙ্গে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে মমতাই মূল প্রতিপক্ষ। বিজেপির লড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই।

    এই পরিস্থিতিতে দিলীপের গতিবিধির ওপর কড়া নজর রাখছে দল। একই সঙ্গে তাঁর থেকে দূরত্ব বজায় রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে দলের অন্দরে। তবে দিলীপ ঘোষ আরএসএস-এর ঘরের ছেলে হওয়ায় তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলে নিজেদেরই ছোট করা হবে বলে মনে করছেন অনেকে।

    বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মতে, সম্ভবত তথাগত রায়ের মতো অবসরে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে দিলীপ ঘোষকে। তাঁকে রাজ্যপাল করে ভিনরাজ্যে পাঠিয়ে দিতে পারে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)