রাজা দাস, বালুরঘাট: মাছের আঁশ শুকিয়ে তৈরি হচ্ছে পুষ্টিকর ফুড সাপ্লিমেন্ট, প্রসাধনী সামগ্রী-সহ একাধিক জিনিস। যা আয়ের দিশা দেখাচ্ছে বালুরঘাটের পাঁচ মৎস্যজীবীকে। সেই সঙ্গে পরিষ্কার থাকছে মাছের বাজার। ফলে খুশি সকলেই।
মাছ উৎপাদনে বরাবর এগিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। এজেলায় ৩৪ হাজার মেট্রিকটন মাছের চাহিদা থাকে প্রতিবছর। বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর-সহ আটটি ব্লকের বাজারে এই মাছের জোগান মেলে জেলার বিভিন্ন নদী, পুকুর, দিঘি, খাল, বিল এবং জলাশয় থেকে। এছাড়া চাহিদা মতো মাছের আমদানি করা হয় বাইরের রাজ্য অর্থাৎ বিহার এবং অন্ধ্রপ্রদেশ থেকেও। মানুষের দৈনন্দিন প্রয়োজন তো বটেই, যে কোনও অনুষ্ঠানে মাছ প্রধান উপাদেয়। কিন্ত এই মাছের ফেলে দেওয়া আঁশ থেকেও যে উপার্জন সম্ভব তা জানা ছিল না এখানকার কারও। এই আঁশই এখন বালুরঘাটের মৎস্যজীবীদের জীবিকার নতুন পথ খুলে দিচ্ছে। আত্রেয়ী নদীর পাড়ে মাছের আঁশ শুকিয়ে রপ্তানির উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। প্রথমে কলকাতা নিয়ে গিয়ে সেই আঁশ গুঁড়ো করে পালিশ করা হয়। এরপর বিভিন্ন পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াজাত করে তা বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। আর সেখান থেকেই তৈরি হচ্ছে পুষ্টিকর ফুড সাপ্লিমেন্ট, সৌন্দর্য প্রসাধনী, চুমকি-সহ একাধিক পণ্য।
জানা যাচ্ছে, প্রতি কুইন্ট্যাল আঁশের দাম মিলছে প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এই আঁশ বিক্রি করেই বাড়তি আয় করছেন এলাকার কয়েকজন মৎস্যজীবীরা। এতে মাছ বাজারও থাকছে অনেকটা পরিষ্কার। এই নতুন উদ্যোগ মৎস্যজীবীদের জীবনে এনেছে আশার আলো। খুলে দিয়েছে আয়ের নতুন দিগন্ত। স্থানীয় মৎস্যজীবী উত্তম সরকারের কথায়, “এই কাজের মাধ্যমে এক বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। নতুন আয়ের রাস্তা মিলেছে।” মৎস্যজীবী শ্যামসুন্দর সরকারের কথায়, “শুধু আয় বাড়ছে তা না, মাছ বাজারও পরিষ্কার থাকছে। আগে এগুলি ফেলেই দেওয়া হত, এখন সেগুলিই সম্পদ হয়ে উঠেছে।”