• সাঁকরাইলে ফের হাতির হানায় যুবকের মৃত্যু, ক্ষোভ এলাকায়
    বর্তমান | ০৯ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রামে হাতির হানায় মৃত্যু অব্যাহত। বুধবার রাতে সাঁকরাইলের কেঁন্দুডাংরী গ্ৰামে হাতির আক্রমণে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম সঞ্জিত মাহাত(২৫)। হাতি আসার খবর খবর পেয়ে ওই যুবক রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ জমিতে গিয়েছিলেন। একটি হাতি পিছন থেকে এসে আক্রামণ চালায়। বুকে পা দিয়ে পিষে দেয়। উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খড়্গপুর বনবিভাগের ডিএফও মনীশ যাদব বলেন, খড়্গপুর রেঞ্জ এলাকায় এই মুহূর্তে ৫৭টি হাতি রয়েছে। কলাইকুণ্ডা রেঞ্জের বারডাঙা বিট এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। হাতির পালের কাছে না যাওয়ার জন্য বারবার সচেতন করা হচ্ছে। অনেকেই সতর্কতা মানছেন না। যুবকের পরিবারকে নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

    কলাইকুণ্ডা রেঞ্জ এলাকায় এক সপ্তাহ ধরে ১৭টি হাতি ঘুরে বেড়াচ্ছে। চাষিরা হাতির ফসল খেয়ে নেওয়ার ভয়ে জমির ধান দ্রুত কেটে ফেলছিলেন। মাঠ থেকে কাটা ধান যাঁরা তুলতে পারেননি তাঁরা দিনরাত পাহারা দিচ্ছিলেন। তারপরও ফসল বাঁচানো যাচ্ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গ্ৰাম সংলগ্ন ঢেঁডড়াগেড়া জঙ্গলে থাকা দলছুট চারটি হাতি রাতে জমির ফসল খেয়ে যাচ্ছিল। ফসল বাঁচাতে দিনরাত পাহারা চলছিল। হাতি আসার খবর পেয়ে ওই যুবক রাতে জমিতে গিয়েছিলেন। হাতি পিছন থেকে এসে আক্রামণ চালায়। গ্ৰামবাসীদের অভিযোগ, বনবিভাগ হাতির পালের কাছে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করে দায় সারছে। জমির ফসল রক্ষার জন্যই চাষিদের জমিতে ছুটে যেতে হচ্ছে। 

    মৃতের দাদা বিশ্বজিৎ মাহাত বলেন, হাতি আসার খবর পেয়েই ভাই আমাদের জমির দিকে ছুটে গিয়েছিল। যেসব চাষির জমি থেকে ধান তোলা হয়নি, তাঁরা জমির দিকে গিয়েছিলেন। হাতিটি পিছন থেকে এসে ভাইকে আক্রমণ করে। হাতির পালের কাছে যেতে বারণ করা হচ্ছে। কিন্তু ফসল না বাঁচলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। আমরা চাইছি হাতির পাল আসা আটকাতে বনবিভাগ স্থায়ী পদক্ষেপ নিক। পরিবারের সদস্য কমল মাহাত বলেন, ১৭টি হাতি এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে। জঙ্গল থেকে বের হয়ে জমির ফসল খেয়ে যাচ্ছে। বনবিভাগের কর্মীদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। হাতির তাণ্ডবে এই এলাকা বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। এলাকার মানুষের অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে। ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের প্রাক্তন কর্তা সমীর মজুমদার বলেন, গত কয়েক মাসে জেলার দক্ষিণ অংশে হাতির হানায় একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। হাতির হানা ঠেকাতে বন বিভাগের পরিকল্পিত কোনও পদক্ষেপ নেই। প্রশাসনও নীরব। হাতির হানায় এভাবে একের পর এক সাধারণ মানুষের মৃত্যু কোনওভাবে মেনে নেওয়া যায় না।  গড় শালবনীতে রাজ্য সড়ক পার হচ্ছে অসুস্থ হাতি ‘রামলাল’। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)