• প্রভু জগন্নাথের কৃপা, লক্ষ্মীলাভ এসবিএসটিসির, দৈনিক আয় বাড়ল এক লক্ষ টাকা
    বর্তমান | ০৯ মে ২০২৫
  • শ্রীকান্ত পড়্যা, তমলুক: দীঘায় প্রভু জগন্নাথের ‘নব আলয়’ দ্বারোদ্ঘাটনের পর ৩০এপ্রিল থেকে পুণ্যার্থীদের ভিড় উপচে পড়ছে। প্রচুর জনসমাগমে পর্যটনের পাশাপাশি পরিবহণেও ব্যাপক রোজগার হচ্ছে। প্রতিদিন এসবিএসটিসির শুধু দীঘা ডিপোর গড় আয় হচ্ছে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা। মন্দির উদ্বোধনের আগে এটা সাড়ে চার লক্ষ টাকা ছিল। কিন্তু, মে মাসের শুরু থেকেই দৈনিক আয় এক লাফে বেড়ে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা হয়েছে। প্রতিদিন বেলঘরিয়া, হাওড়া, ফলতা, আরামবাগ, ক্ষীরপাই, মেদিনীপুর ও দুর্গাপুর সহ বিভিন্ন ডিপো থেকে ৮৫-৯০টি সরকারি বাস চলাচল করছে। দীঘাগামী এসবিএসটিসির বাসে ভিড় বেড়েছে। দীঘা ডিপোর পাশাপাশি অন্যান্য ডিপোতেও ভালো রোজগার হচ্ছে। জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের ফলে দীঘার হোটেলে ভিড় বেড়েছে। এছাড়াও নিউ দীঘা এবং ওল্ড দীঘায় মহিলাদের সাজগোজের জিনিসপত্র, ছোটদের খেলনা, গৃহস্থলির বিভিন্ন সামগ্রী, কাজু থেকে লাড্ডু, শোনপাপড়ি সহ নানারকম জিনিসও অনেক বেশি বিক্রি হচ্ছে।

    এসবিএসটিসির দীঘা ডিপোর ইনচার্জ সোমনাথ ঘোষ বলেন, দীঘা ডিপো থেকে আগে সাড়ে চার লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি হতো। জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর সেটা সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকায় পৌঁছেছে।

    ৩০এপ্রিল থেকেই রাজ্যের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গরমের ছুটি পড়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকেই কাতারে কাতারে মানুষজন জগন্নাথ মন্দির দর্শন করতে দীঘায় আসছেন। উদ্বোধনের পর প্রথম পাঁচদিন একটিমাত্র গেট দিয়ে মন্দিরে পুণ্যার্থীদের ঢোকানোর ব্যবস্থা ছিল। অন্য একটি গেট দিয়ে তাঁরা বেরতেন। তাতে গেটের সামনে লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছিল। প্রচণ্ড গরমে পুণ্যার্থীদের কষ্ট হচ্ছিল। তাই মূল প্রবেশদ্বারও খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন মন্দিরে ঢোকার গেট দু’টি এবং বেরনোর জন্য আলাদাভাবে খোলা থাকছে আরও দু’টি গেট।

    সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সাড়ে তিনশো পুলিস অফিসার, কর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ার মন্দির প্রাঙ্গণে ডিউটিতে থাকছেন। একদল ভিড় নিয়ন্ত্রণ করছে। আর একদল ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত। মন্দিরের সুরক্ষায় পুলিস অফিসার-কর্মীরা ডিউটি দিচ্ছেন। সন্ধ্যার পর রোজ চারজন ডিএসপি পদমর্যাদর অফিসার মন্দিরে ডিউটি করছেন। প্রতিদিন ৩০জন করে লেডি কনস্টেবলকে ভিড় নিয়ন্ত্রণে এবং মন্দিরের সুরক্ষায় নিযুক্ত করা হচ্ছে।

    দীঘা যাতায়াতের জন্য বাসের পাশাপাশি ট্রেনেও যাত্রী সংখ্যা অনেকটা‌ই ঩বেড়েছে। এই মুহূর্তে পাঁশকুড়া থেকে দীঘা একটি স্পেশাল ট্রেনও চলছে। সেই সুবাদে রেলেরও লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে। দীঘা স্টেশন ম্যানেজার সঞ্জীব মহাপাত্র বলেন, আগের তুলনায় পর্যটক বেড়েছে।

    রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি নিতাই সার বলেন, পর্যটন এবং ধর্মীয় আবেগে দীঘা পূর্ব ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ডেস্টিনেশন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আগে শুধু পর্যটকরা ভিড় জমাতেন। এখন জগন্নাথ ভক্তরাও লাইন দিয়ে দীঘায় আসছেন। তাঁরা মন্দির দর্শন করছেন। নিজেরা এলাকায় গিয়ে মন্দিরের অপরূপ ভাস্কর্য নিয়ে গল্প করার পর আশপাশের এলাকা থেকে আরও লোকজন আসছেন। রোজ দীঘায় হাজার হাজার মানুষের ভিড় লেগেই রয়েছে। তারজন্য হোটেল থেকে পরিবহণ সবেতেই আয় বেড়েছে। এজন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞ।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)