নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: উচ্চমাধ্যমিকের ফলে নদীয়া জেলার পরীক্ষার্থীদের সাফল্য ইতিমধ্যে নজর কেড়েছে রাজ্যের শিক্ষামহলের। জেলায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ছাত্রী। প্রায় সাড়ে চার হাজার ছাত্রী ফার্স্ট ডিভিশন পেয়ে পাশ করেছেন। দেখা যাচ্ছে, উচ্চ নম্বর প্রাপ্তির বিচারে ছাত্রদের ছাপিয়ে গিয়েছেন ছাত্রীরা। যদিও নদীয়া জেলায় সামগ্রিকভাবে ছাত্রীদের পাশের হার ছাত্রদের তুলনায় কম। কারণ নদীয়া জেলায় সফল হওয়া পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৪.৫৯ শতাংশ ছাত্র এবং ৯০.৬২ শতাংশ ছাত্রী। তবে উচ্চ নম্বরের ক্ষেত্রে ছাত্রীদের এই ফলাফল আশাপ্রদ বলেই মনে করছে শিক্ষক মহল।
শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল ২০ হাজার ৩৮ জন। পাশ করেছে ১৮ হাজার ৫৬২ জন। কৃতকার্য হওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৫১.৮৩ শতাংশ অর্থাৎ ৯ হাজার ৬২১ জন ছাত্র এবং ৪৮.১৮ শতাংশ অর্থাৎ ৮ হাজার ৯৪১ জন ছাত্রী রয়েছে। পাশের হারে পিছিয়ে থাকলেও প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়ার নিরিখে ছাত্রীর সংখ্যা ছাত্রদের থেকে বেশি।।
শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলায় ফার্স্ট ডিভিশন পেয়ে পাশ করেছে ৮ হাজার ৪৮৬ পরীক্ষার্থী। যার মধ্যে ছাত্রী ৪ হাজার ৪৭২ এবং ছাত্র ৪ হাজার ১৪ জন। দেখা যাচ্ছে, নদীয়া জেলায় ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে ৩০২ জন পরীক্ষার্থী। তার মধ্যে ছাত্র ১৩৮ জন এবং ছাত্রী ১৬৪ জন। আবার ৮০ থেকে ৮৯ শতাংশ নম্বর পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭২০ জন। তার মধ্যে ৬৭৭ জন ছাত্র এবং ১০৩৪ জন্য ছাত্রী। ৭০ থেকে ৭৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন ২৮৯৬ জন পরীক্ষার্থী। সেখানেও পাশ করার ছাত্রীর সংখ্যা ১৪৯৯ এবং ছাত্রের সংখ্যা ১৩৯৭ জন। এই তিনটি স্তরেই নদীয়া জেলার ছাত্রীরা, ছাত্রদের থেকে এগিয়ে রয়েছে। তবে ৬০ থেকে ৬৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ হাজার ৫৬৮। সেখানে আবার পাশ করা ছাত্রীদের থেকে ছাত্রদের সংখ্যা বেশি। ৬০ থেকে ৬৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে ১৮০২ জন ছাত্র এবং ১৭৬৬ জন ছাত্রী পাশ করেছেন। শিক্ষাদপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, নদীয়া জেলায় সংখ্যালঘু পরীক্ষার্থীদের পাশের হার বেশি ভালো। জেলার ৮৮.৭৩ শতাংশ পরীক্ষার্থীর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে।
নদীয়া জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ কার্তিক মণ্ডল বলেন, রাজ্য সরকারের নারী শিক্ষা প্রসারে নানা প্রকল্পের কারণেই এই ফলাফল হয়েছে। জেলায় বহু ছাত্রী ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছে। আমরা প্রত্যন্ত এলাকার ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য উৎসাহিত করছি।
কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের ১১৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১৭ জন পাশ করেছে। সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সৌর প্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৬। পাশাপাশি কৃষ্ণনগর হাই স্কুলের ৯১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮৫ জন পাশ করেছে। কৃষ্ণনগরের ভালুকা হাই স্কুলের পরীক্ষা দেওয়া ১০৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সকলেই পাশ করেছে। সেই স্কুল থেকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে শুভদীপ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৩। তাঁর স্বপ্ন বড় হয়ে গায়ক হওয়ার। তিনি বলেন, আমাদের স্কুলের শিক্ষকরা আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। আগামী দিনে ইংলিশ অনার্স করা আর গায়ক হওয়ার ইচ্ছা আছে। -নিজস্ব চিত্র