• বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর, ঝামেলা থামাতে গিয়ে টালায় প্রহৃত এসআই
    বর্তমান | ০৯ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দু’পক্ষের ঝামেলা সামলাতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন চিৎপুর থানার সাব ইনসপেক্টর। রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধরের পর সৌরভ রায় নামের ওই অফিসারকে মাথার পিছনে বাঁশ দিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। বাঁশের আঘাতে রক্তাক্ত হলেও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে টালা থানা এলাকার রাজা মণীন্দ্র রোড ও তারাশঙ্কর সরণির সংযোগস্থলে। শেষমেশ পুলিসের বড় বাহিনী এসে কোনওক্রমে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে ওই অফিসারকে। তাঁর মাথায় একাধিক সেলাই পড়েছে। ঘটনায় জড়িতদের খোঁজ চলছে। এই এলাকাটি চিৎপুর ও টালা থানার বর্ডার এলাকায়।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজা মণীন্দ্র রোডের বাসিন্দা একদল যুবকের সঙ্গে দমদম বেদিয়াপাড়া এলাকার একটি গোষ্ঠীর ঝামেলা হয়। অভিযোগ, মণীন্দ্র রোডের কয়েকজন যুবকের যাতায়াত রয়েছে বেদিয়াপাড়ায়। সেখানে কোনও বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে স্থানীয় যুবকদের গোলমাল হয়। তা নিয়ে প্রথমে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। অভিযোগ, বেদিয়াপাড়ার লোকজনকে মণীন্দ্র রোডের ছেলেরা মারধর করে। এই খবর বেদিয়াপাড়ায় ছড়িয়ে পড়তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। বদলা নিতে ৩০-৪০ জনের একটি দল বাইক নিয়ে হাজির হয় বেলগাছিয়া এলাকায়। তাদের সঙ্গে ছিল লাঠি, উইকেট। তারা এলাকায় ঢুকেই তাণ্ডব শুরু করে। যে ব্যক্তির খোঁজে এসেছিল, তাকে না পেয়ে অন্য এক যুবককে বেধড়ক মারধর করে তারা। এই খবর পাওয়া মাত্র বেলগাছিয়া বস্তি থেকে বাঁশ, লাঠি নিয়ে লোকজন পিলপিল করে বেরিয়ে আসে রাস্তায়। তারা বেদিয়াপাড়ার ছেলেদের ঘিরে ফেলে। শুরু হয় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ। স্বভাবতই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। এরমধ্যেই স্থানীয় এক ব্যক্তি গোলমালের কথা জানাতে ফোন করেন চিৎপুর থানায়। বলেন, বহিরাগতরা এসে পাড়ায় ঝামেলা করছে। সেই সময়ে ডিউটিতে ছিলেন সাব-ইনসপেক্টর সৌরভ রায়। তিনি সার্জেন্টকে নিয়ে বাইকে করে এলাকায় আসেন। তখন মণীন্দ্র রোড ও তারাশঙ্কর সরণির সংযোগস্থল যেন রণক্ষেত্র। কয়েক হাজার লোক রাস্তায়। বাইক থেকে নেমে সাব-ইনসপেক্টর ঝামেলা থামানোর চেষ্টা করলে তাঁকে ঘিরে ধরেন স্থানীয়রা। সেই সময় আচমকা তাঁর উপর চড়াও হয় স্থানীয়রা। রাস্তায় ফেলে এলোপাথারি কিল, ঘুসি মারা হয়। ওই অফিসার ওঠার চেষ্টা করলে এক ব্যক্তি বাঁশ দিয়ে তাঁর মাথার পিছনে সজোরে আঘাত করে। মাথা ফেটে গলগল করে রক্ত বেরতে থাকে। তাঁর সঙ্গে থাকা সার্জেন্ট থানায় ফোন করে বাড়তি পুলিস চান। ফোর্স এসে ওই সাব ইনসপেক্টরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় পরে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাঁকে বৃহস্পতিবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিস।
  • Link to this news (বর্তমান)