৯০০ গাড়ি রাখার ভূগর্ভস্থ পার্কিং প্লাজা হবে ধর্মতলায়, খরচ ৪৫০ কোটি
বর্তমান | ০৯ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মেট্রো সম্প্রসারণের কারণে অদূর ভবিষ্যতে ধর্মতলা হয়ে উঠতে চলছে যাত্রী পরিবহণের মূল কেন্দ্রবিন্দু। জোকা-ধর্মতলা, দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ এবং ইস্ট ওয়েস্ট, এই তিন পথের সংযোগস্থল হতে চলেছে ধর্মতলা। ফলে আগামী দিনে চাপ বাড়বে। সে কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই ধর্মতলা থেকে বাস স্ট্যান্ড অন্যত্র সরানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গোটা চত্বরের ভোল পাল্টে দিতেও বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার।
বর্তমানে যে জায়গায় সরকারি এবং বেসরকারি বাসের স্ট্যান্ড রয়েছে সেখানে মাটির নীচে তৈরি হবে পার্কিং প্লাজা। প্রায় ৯০০ গাড়ি সেখানে রাখা যাবে। পাশাপাশি এখান থেকে বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে যাতে সহজে যাতায়াত করা যায় তার জন্য থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা। বুধবার কলকাতা পুরসভায় এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। পুর কর্তৃপক্ষ ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহণ, পূর্তদপ্তর, কলকাতা পুলিস ও সেনা আধিকারিকরা। রাজ্য সরকারের তরফে সমীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা রাইটস এই প্রকল্পের ডিপিআর তৈরি করেছে। এদিনের বৈঠকে তারা প্রেজেন্টেশন দিয়েছে। সেই ব্লু প্রিন্ট নিয়েও হয়েছে আলোচনা। সমগ্র পরিকল্পনা বাস্তবায়নে খরচ হবে প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা।
রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, কলকাতার পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরে এই পরিকল্পনা নিয়ে প্রশাসনিকস্তরে আলোচনা চলছে। বাস স্ট্যান্ড কোথায় সরানো হবে তা ছিল চিন্তার বিষয়। অন্যদিকে সেনার তরফে অনুমতিরও প্রয়োজন ছিল। কী রয়েছে গোটা পরিকল্পনায়? জানা গিয়েছে, ধর্মতলা মোড়ে বর্তমানে যেখানে সরকারি এবং বেসরকারি বাসের স্ট্যান্ড রয়েছে তার নীচে তৈরি হবে আধুনিক পার্কিং প্লাজা। ধর্মতলা, মেয়ো রোড এবং কার্জন পার্কের দিক থেকে পার্কিং লটে গাড়ি প্রবেশ এবং বের হওয়ার জন্য তিনটি সুরঙ্গ পথ থাকবে। পাশাপাশি চারটির মতো হাঁটা পথ বা সাবওয়ে তৈরি হবে। মেয়র বলেন, ‘প্রেজেন্টেশন দিয়েছে রাইটস। ভবিষ্যতে ধর্মতলায় মানুষের যাতায়াত বাড়বে। মাটির তলায় মেট্রো পথে যাত্রীর চাপ সামলানোর পাশাপাশি রাস্তায় যানবাহন চলাচল যাতে সচল থাকে এবং মানুষ সহজেই যাতায়াত করতে পারেন তার জন্য এই পরিকল্পনা হয়েছে। কোনও বাস স্ট্যান্ড এখানে থাকবে না। তিনটি স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র থাকবে বাস স্টপ। যাত্রী নামিয়ে বাস বেরিয়ে যাবে। পাশাপাশি যাঁদের নিজস্ব গাড়ি রয়েছে, তাঁরা চাইলে গাড়ি পার্কিং লটে রেখে মেট্রোতে গন্তব্যে যেতে পারবেন।’
পাশাপাশি ধর্মতলার উপর বিভিন্ন রাস্তায় যান চলাচল গতিশীল রাখতে চায় প্রশাসন। তাই রাস্তার উপর পার্কিং লট না রেখে সব গাড়ি ভূগর্ভস্থ পার্কিং প্লাজায় রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থাৎ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে অদূর ভবিষ্যতে ধর্মতলার চেহারা যাবে পাল্টে। রাস্তার উপর গাড়ি পার্ক করা না থাকলে পথ আরও প্রশস্ত হবে। গাড়ি চলাচল আরও গতিশীল হবে। অদূর ভবিষ্যতে তিনটি মেট্রো রুট পুরোপুরি চালু হলে বিপুল যাত্রীর চাপ সামলাতে গোটা ধর্মতলা চত্বরকে তাই আধুনিক পরিকাঠামোর মোড়কে মুড়ে ফেলার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য।