নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ পাকিস্তানের পায়ের নীচের মাটি নাড়িয়ে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও ভারতে বড়সড় হামলার ছক কষে চলেছে পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়িয়ে যাতে কেউ ফয়দা তুলতে না পারে তার জন্য আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়ে রাখল নবান্ন। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী, সচিব, হিমঘর, ব্যবসায়ী সংগঠন ও বণিকসভার প্রতিনিধিদের নিয়ে নবান্নে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকেই তাঁর সাফ নির্দেশ, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউ যেন কালোবাজারি না করে। বেশি মুনাফার লক্ষ্যে কেউ যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মজুত বা হোর্ডিং করে না রাখে। এটা ক্রিমিনাল অফেন্স। কালোবাজারি করলে তাঁদের জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হবে।’
এদিন সীমান্ত এলাকা নিয়েও পুলিস প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশ, সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলিতে নজর রাখুন, যাতে কেউ অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে কেউ ঢুকে না পড়তে পারে। রেল স্টেশনগুলিতেও ভালো করে নজর রাখা দরকার। ওইসঙ্গে কোনোভাবেই রাজ্যের উৎপাদিত ফসল সীমান্ত পারে পাচার না-হয়, সেই বিষয়েও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন মমতা। দেশের স্বার্থে ব্যবসায়ীদের দায়িত্বের কথাও তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘পহেলগাঁওয়ের ঘটনা নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে নিজেদের মজুত ভাণ্ডার ঠিক রাখতে বলা হয়েছে। মনে রাখবেন, এটা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সময়। টাকা রোজগার করার সময় নয়। কখনও কখনও কেউ সুযোগের সদ্ব্যবহার করে। আগামী বছর নির্বাচন বলে দাম বাড়িয়ে দেবেন, এমনটাও যেন না-হয়।’
আর এক্ষেত্রে টাস্ক ফোর্স এবং পুলিসকে আচমকা পরিদর্শনে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। তবে তা করতে গিয়ে আখের গোছানোর কথাও যেন কারও মাথায় না আসে। এই বিষয়ে তাঁর এই কড়া মনোভাব জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার করে দেন যে, প্রশাসনকে না জানিয়ে রেইড বা হানা দিতে যাওয়া যাবে না।
এছাড়া শাকসব্জি থেকে শুরু করে মাছ-মাংসের বর্তমান বাজার দর নিয়েও আলোচনা করেন তিনি। মানুষকে ন্যায্যমূল্যে শাকসব্জি সরবরাহের লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে ৬৪৯টি ‘সুফল বাংলা’ স্টল, আরও ১০০টি শীঘ্রই চালু হবে, পুজোর আগে যুক্ত হবে আরও ২৫০টি। তবে মাছের চড়া দাম নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মাঝেই মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘একটা ট্রান্সফার অর্ডার দেওয়া হলে আটকে রাখেন কেন? জানেন না প্রশাসনের হায়েস্ট স্তর থেকে কোনও ট্রান্সফারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা আটকে রাখা যায় না!’ ন্যায্যমূল্যে মাছ বিক্রির জন্য সুফল বাংলা (মৎস্য) স্টলগুলি দ্রুত চালু করার নির্দেশও দেন তিনি। এদিকে, অনাথ আশ্রম ও বৃদ্ধাশ্রমগুলি নিয়ে সমাজকল্যাণ দপ্তরকে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র