চলছে বিশেষ নজরদারি, ভারতের বিভিন্ন জেলে বন্দি পাক জঙ্গিদের গতিবিধি খুঁটিয়ে দেখছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
আনন্দবাজার | ০৯ মে ২০২৫
ভারতের বিভিন্ন জেলে বন্দি থাকা পাকিস্তানি জঙ্গিদের উপর বিশেষ নজরদারির বন্দোবস্ত করা হল। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভারতীয় পর্যটকদে উপর জঙ্গিহানার ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৬ জন। ৭ মে গভীর রাতে সেই জঙ্গিহানার জবাবস্বরূপ ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তানকে প্রত্যাঘাত করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এই আবহে এক দিকে যেমন দেশের তিন সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে, তেমনই দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে একাধিক পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বুধবার সীমান্তবর্তী ১০ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীদের মতামত নেওয়ার পাশাপাশি বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন শাহ। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, বিভিন্ন রাজ্যের কারা দফতরগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষকর্তারা। ভারতের জেলে বন্দি কুখ্যাত পাক জঙ্গিদের উপর বিশেষ নজরদারি করতে বলা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলে প্রায় আট জন পাকিস্তানি জঙ্গি বন্দি রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম জাভেদ মুন্সি, শাহবাজ় ইসমাইল, মহম্মদ মসিউদ্দিন ওরফে মুসা। এর মধ্যে মুসা রয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলে। তাকে নিয়ে সদাই ব্যতিব্যস্ত থাকে জেলের প্রশাসন।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলেই বন্দি থাকা তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে মানববর্জ্য ছুড়ে মারে আইএস জঙ্গি মুসা। সেই সময় জেলে এমন ঘটনা ঘটা নিয়ে চাপে পড়েছিলেন জেল কর্তৃপক্ষ। পরে এমন পরিস্থিতি দেখে মুসার গতিবিধির উপর নজর রাখতে জেলে অতিরিক্ত সিসিটিভি লাগানো হয়েছিল। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সেই সব সিসিটিভির উপর মানববর্জ্য লাগিয়ে দেয় মুসা। সেই ঘটনার পর থেকে তার উপর অতিরিক্ত নজরদারি শুরু হয় জেলে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের মতো কুখ্যাত পাঁচ জঙ্গির উপর বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের কারা দফতরের ডিজি লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘‘শুধু উদ্ভূত পরিস্থিতি নয়, পশ্চিমবঙ্গের জেলে থাকা জঙ্গিদের উপর সব সময় আমাদের নজর থাকে।’’ কারা দফতর সূত্রে খবর, চলতি আবহে যাতে ওই জঙ্গিরা জেলের অন্য কোনও বন্দির সঙ্গে পৃথক ভাবে কথা না বলতে পারে, সেই বিষয়েও নজরদারি করা হচ্ছে। এক কথায় সীমান্তের উত্তেজনার বাতাস দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দিতে নারাজ কেন্দ্র।