• ‘যদি এখানে হয়!’ আপৎকালীন পরিস্থিতিতে পণ্য কালোবাজারি নিয়ে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতার, ‘এটা রোজগার করার সময় নয়’!
    আনন্দবাজার | ০৯ মে ২০২৫
  • পহেলগাঁও পরবর্তী ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার আবহে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কালোবাজারি নিয়ে রাজ্যের প্রশাসন এবং ব্যবসায়ী মহলকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রী, সচিব, হিমঘর, ব্যবসায়ী সংগঠনকে নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘পহেলগাঁওয়ের ঘটনা নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে নিজেদের ভান্ডার মজুত রাখতে বলেছে (কেন্দ্র)। মনে রাখবেন, এটা টাকা রোজগারের সময় নয়। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সময়।’’

    দেশের যে রাজ্যগুলির সঙ্গে পাকিস্তান এবং নেপালের সীমান্ত রয়েছে, তেমন ১০টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে বুধবার বৈঠক করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই বৈঠকে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাও। তার পরেই বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, ‘‘আপনি ভাবছেন কাশ্মীরের উপর দিয়ে হবে। যদি এখানে হয়!’’ সামগ্রিক ভাবে প্রশাসনকেও সতর্ক করতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘টাস্ক ফোর্সকে সঙ্গে নিয়ে বাজারগুলিতে নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে। প্রয়োজনে হঠাৎ হানাও দিতে হবে।’’ হঠাৎ হানা বা ‘সারপ্রাইজ় ভিজ়িট’-এর নামে যাতে অনিয়ম না-হয়, সে বিষয়েও সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা কাউকে দায়িত্ব দিলাম আর তিনি বললেন তাঁকে না-দিলে (উৎকোচ বাবদে অর্থ) হানা হবে, সেটা করা যাবে না। হানা দিতে হলে প্রশাসনকে জানিয়ে তা করতে হবে।’’

    বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিশের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিমও। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, মুনাফার জন্য সীমান্তবর্তী এলাকায় বেশি করে পণ্য পাঠানো বা মজুতদারি করা যাবে না। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যের পণ্য বাইরে পাঠানো যাবে না। গত বছর বলা সত্ত্বেও আলু বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। আমরা সীমান্তে ধরেছিলাম। এ বার যেন তা না-হয়। আপনারা ভাববেন না যে, রেলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেবেন আর রাজ্য সরকার কিছু জানতে পারবে না। ও সব হবে না। অতি লোভে তাঁতি নষ্ট করতে যাবেন না। মানুষের কোনও অসুবিধা হলে আমি কিন্তু কাউকে ছাড়ব না।’’

    মমতার পরিকল্পনাতেই রাজ্য সরকার তুলনামূলক কম দামে সব্জি বিক্রির জন্য ‘সুফল বাংলা’ স্টল করেছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে এখন ৬৯৪টি স্টল রয়েছে। আরও ২৪৯টি স্টল হবে বলে বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেন তিনি। বাংলার মানুষের যে পরিমাণ আলু প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশি আলু রাজ্যের ৫১৮টি হিমঘরে মজুত আছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি নির্দেশ দিয়েছেন মাছ, মুরগির মাংস, ডিমের দাম যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, তা-ও সুনিশ্চিত করতে হবে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)