• যাদবপুর-জেএনইউয়ে মিসাইল হামলা চেয়ে উস্কানিমূলক পোস্ট
    এই সময় | ০৯ মে ২০২৫
  • এই সময়: পাকিস্তানে জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে অপারেশন সিঁদুর চলছে। দেশের সব রাজনৈতিক দল নরেন্দ্র মোদীর সরকারের পাশে রয়েছে। কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানি শেলিংয়ে অনেক সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখার নিকটবর্তী এলাকার বহু বাসিন্দা জখম হয়ে চিকিৎসাধীন।

    এমন স্পর্শকাতর সময়ে দেশের মানুষ যখন ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন, তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু বিতর্কিত পোস্টের দেখা মিলছে। উত্তরণ পাঠক নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট হয়েছে—‘দু–চারটে জেইউ এবং জেএনইউতে ফেললে হয় না? নাম দেওয়া হোক অপারেশন দেশদ্রোহী মাক্কুক্লিন’।

    সিপিএমের কলকাতা জেলার নেতা সুদীপ সেনগুপ্ত এই পোস্টটি চিহ্নিত করেন। ঋভু গুপ্ত নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও পোস্ট হয়েছে— ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে মিসাইল হামলা হোক’। ওই পোস্টটি নিয়ে এসএফআই নেতা সৃজন ভট্টাচার্য কলকাতা ও রাজ্য পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন।

    একই ভাবে কংগ্রেসের যুব নেতা রোশন মিত্র এবং সিপিএমের যুব নেতা শতরূপ ঘোষ আরও একটি ফেসবুক পোস্ট চিহ্নিত করেছেন। আর্য বসাক নামে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট হয়েছিল, ‘একটা মিসাইল মেটিয়াবুরুজ, পার্ক সার্কাসে প্লিজ’।

    শতরূপরা এই পোস্ট চিহ্নিত করার পর ওই আর্য বসাককে উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ থানা তলব করে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এই পোস্ট ডিলিট করানো হয়। তবে থানা ওই ব্যক্তিকে সতর্ক করেই ছেড়ে দিয়েছে, মামলা রজু করেনি।

    এই প্রসঙ্গে শতরূপের বক্তব্য, ‘পুলিশের ডাক পেয়ে পোস্ট ডিলিট করেও (ওই ব্যক্তি) কিন্তু ভারত–বিরোধী প্রচার বন্ধ করছে না। ভারতের মাটিতে মিসাইল হামলার প্রচার করছে। আইন অনুযায়ী এর পরের পদক্ষেপগুলি নেওয়ার জন্যে প্রশাসন উদ্যোগী হোক।’

    অপারেশন সিঁদুর শুরু হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। কিছু ভিডিয়োর সঙ্গে যে অপারেশন সিঁদুরের কোনও সম্পর্ক নেই, তা তৃণমূলের আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য চিহ্নিত করেছেন। পশ্চিম এশিয়ার ভিডিয়োকে অপারেশন সিঁদুরের ভিডিয়ো বলে চালানো হচ্ছে বলে তৃণমূলের বক্তব্য।

    কিন্তু যাদবপুর–জেএনইউ অথবা কলকাতা মহানগরের কয়েকটি জায়গায় হামলার সওয়াল করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেখে বহু মানুষ চমকে উঠেছেন। যাদবপুর এবং জেএনইউ দেশের প্রথম সারির দুটি বিশ্ববিদ্যালয়––সেই দুটি ক্যাম্পাসে ‘দু–চারটে ফেললে হয় না?’ বলে পোস্ট করার পরেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে সুদীপের অভিযোগ।

    তৃণমূলের বক্তব্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোথায় কী পোস্ট হচ্ছে সবটা পুলিশের নজরে তৎক্ষণাৎ আসে না। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হলে নিশ্চয়ই তারা কাজ করবে।

    এই প্রসঙ্গে দেবাংশুর বক্তব্য, ‘যাদবপুরের কিছু ছাত্রের মনোভাব, তাঁদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি, পোস্টার আমরাও সমর্থন করি না। কিন্তু দেশ যখন শত্রুর সঙ্গে লড়াই করছে তখন এই ধরনের পোস্ট পাকিস্তানের হাত শক্ত করবে। কারণ পাকিস্তান চাইবে আমাদের ঐক্য বিনষ্ট করতে।’

    এই ধরনের পোস্টের নেপথ্যে গেরুয়া শিবিরের ইন্ধন থাকার সম্ভবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না তৃণমূল। যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, পহেলগামের ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু বিতর্কিত পোস্ট হলেও রাজ্য পুলিশ পদক্ষেপ করেনি।

    সুকা‍ন্তের প্রশ্ন, ‘পহেলগামে জাত–ধর্ম দেখে যখন মারা হলো তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা উল্লাস প্রকাশ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে? কতজন গ্রেপ্তার হয়েছে? অনেক রাজ্য সরকার কিন্তু ব্যবস্থা নিয়েছে।’ যদিও এমন কোনও ‘উল্লাস পোস্ট’–এর নজির কেউ পেশ করেননি বলেই প্রশাসনিক সূত্রের দাবি।

  • Link to this news (এই সময়)