এই সময়, পানিহাটি: পানিহাটির জঞ্জাল নগরীর তকমা এ বার মুছতে চলেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে শিগগিরই সমাধান হতে চলেছে জঞ্জাল সমস্যার। ভাগাড় তৈরি নিয়ে পানিহাটি পুরসভা এবং সংলগ্ন বিলকান্দা–১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জমি জট কেটে গিয়েছে।
এ বার নির্দিষ্ট ওই জমিতে পানিহাটির আবর্জনা ফেলা হবে। তার প্রস্তুতি জোরকদমে শুরু করে দিয়েছে পুরসভা। গত প্রায় দেড় বছর ধরে জঞ্জাল নিয়ে পানিহাটির মানুষের অভাব অভিযোগের শেষ নেই।
পুর এলাকার গলি রাস্তা হোক কিংবা প্রধান রাস্তার দু’পাশে জঞ্জাল জমে থাকা নিয়ে মানুষের কম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না। স্থানীয় মানুষের আন্দোলনে পুরসভার নিজস্ব রামচন্দ্রপুর ডাম্পিং গ্রাউন্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জঞ্জাল সমস্যা আরও দীর্ঘ হয়।
সমস্যা মেটাতে পুরসভা লাগোয়া পাশের খড়দহ বিধানসভার বিলকান্দা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া মহিষপোতা মৌজায় পুরসভার ৪.২১ একর ফাঁকা জমিতে বিকল্প ভাগাড় তৈরির সিদ্ধান্ত হলেও স্থানীয়দের বাধায় তা আটকে যায়।
এরই মধ্যে পুরসভায় পুরপ্রধান পদে রদবদল ঘটেছে। একের পর এক অভিযোগে বিদ্ধ পানিহাটি পুরসভার হাল ফেরাতে মলয় রায়কে সরিয়ে পুরপ্রধান করা হয় সোমনাথ দে–কে। তিনি পুরপ্রধান পদে শপথ নিয়ে পানিহাটির ঘাড় থেকে জঞ্জাল নগরীর তকমা যাতে মোছা যায় সে ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন বলে আশ্বাস দেন।
সেই মতো প্রশাসনিক স্তরে শুরু হয়েছে জোর তৎপরতা। পুরসভার অনুরোধে উদ্যোগী হয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। গত ২৪ এপ্রিল মন্ত্রীর ঘরে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ছিলেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ সৌগত রায়, পার্থ ভৌমিক, স্থানীয় বিধায়ক নির্মল ঘোষ ছাড়াও পানিহাটি পুরসভা এবং বিলকান্দা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধিরা।
সেখানেই ঠিক হয়েছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারের মহিষপোতা মৌজার যে জমিতে ভাগাড় হওয়ার কথা ছিল, সেই জমি স্থানীয় পঞ্চায়েতকে হস্তান্তর করবে পুরসভা। পরিবর্তে বিলকান্দা–১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিষপোতা মৌজার কিছুটা দূরে ১৫ বিঘা জমি তারা পুরসভাকে হস্তান্তর করবে এবং ওই ফাঁকা জমিতে ভাগাড় হবে।
দু’পক্ষ তাতে রাজি হয় এবং পরদিন নগরোন্নয়ন দপ্তর ও কেএমডিএর আধিকারিকরা স্থানীয় পুরসভা ও পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে ওই জমি পরিদর্শন করেন। জমি পছন্দ করে সেখানে ভাগাড় তৈরিতে সবুজ সঙ্কেত দেন আধিকারিকরা। সেইমতো পুরসভা ও পঞ্চায়েত তারা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা এবং বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে জমি হস্তান্তরের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ফেলেছে ইতিমধ্যে।
ওই জমি পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। পুরপ্রধান সোমনাথ দে বলেন, ‘মহিষপোতা মৌজায় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে পুরসভার যে জমিতে ভাগাড় করা নিয়ে মানুষের আপত্তি ছিল সেই জমিটি আমরা সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতকে দিয়েছি। পরিবর্তে পঞ্চায়েত আমাদের কিছুটা দূরে জমি দিয়েছে। সেখানেই ভাগাড় তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।’