দিব্যেন্দু সরকার, আরামবাগ
ফের প্রশ্ন! ভাবাদিঘি জট কবে খুলবে? কবেই বা রেল লাইনের কাজ শুরু হবে?
প্রায় ১৫ বছর ধরে ভাবাদিঘির জটে রেল চলাচল বন্ধ। এই নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই আদালতের নির্দেশে ভাবাদিঘিতে রেলের কাজ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে বারবার বাধা পাচ্ছে সেই কাজ।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার আরামবাগ মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে ভাবাদিঘির জট নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে ভাবাদিঘি আন্দোলনের নেতাদের ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেই কোনও নেতাই বৈঠকে আসেননি। তাতেই কি ভেস্তে গেল বৈঠক? তা হলে কি প্রশাসনের অনিচ্ছা ও একেবারে দায়সারা ভাবের জন্যই এই জট কাটছে না? প্রশ্ন তুলছে সাধারণ মানুষই।
ভাবাদিঘি আন্দোলনের নেতা সুকুমার রায় বলেন, ‘আমাদের কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি। ফোনে মৌখিক ভাবে বলা হয়েছে। কী ভাবে বৈঠকে যাব? তা ছাড়া বিডিও অফিসে গিয়ে আমরা বলে এসেছিলাম, গ্রামে পুজো আছে। আপনারা পরের সপ্তাহে লিখিত ভাবে জানাবেন। তা হলে আমরা বৈঠকে বসব।’
এ দিন বৈঠক না হওয়ায় মহকুমার মানুষ হতাশা প্রকাশ করেছেন। কোনও এক অদৃশ্য কারণে এখনও ভাবাদিঘির জট না কাটায় ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে আরামবাগ মহকুমা জুড়ে। ইতিমধ্যেই তারকেশ্বর থেকে গোঘাট পর্যন্ত রেল চলছে। কিন্তু ভাবাদিঘির জট না কাটায়, শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের জন্মস্থান তথা পুণ্যভূমি কামারপুকুরে রেল গেল না আজও।
একদিকে শাসকদল তৃণমূল ও প্রধান বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে পরস্পর–বিরোধী অভিমত, অন্য দিকে প্রশাসনের চরম গাফিলতি এবং রাজনৈতিক স্বার্থে ভাবাদিঘির মানুষকে ব্যবহার করায় এই জট এখনও কাটেনি বলে অভিযোগ। একইসঙ্গে, স্থানীয় মানুষের জেদ ও জলাশয় বাঁচানোর নামে রাজনীতি করার জন্যই মানুষ আজ তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত রেলে চাপা থেকে বঞ্চিত হয়ে রয়েছেন।
গোঘাটের মানুষ গত বিধানসভায় ভাবাদিঘি ইস্যুকে সামনে রেখে বিজেপিকে সমর্থন করে এবং বিজেপির বিধায়ক হন বিশ্বনাথ কারক। প্রায় চার বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও ভাবাদিঘির জট কাটাতে কোনও ভাবে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি তাঁকে, অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে।
এই বিষয়ে গোঘাটের বিজেপি বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক বলেন, ‘আর কোনও সমস্যা নেই। এ বার সবটাই জেলাশাসকের দায়িত্ব। রাজ্য জমি দিলেই হয়ে যাবে। এলাকাতেও কোনও সমস্যা নেই। বৈঠকে আমাকে ডাকা হয়নি। রাজ্য প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্যই ভাবাদিঘির জট কাটছে না বলে আমি মনে করি।’