যুদ্ধের আঁচ, পর্যটকশূন্য টিউলিপ ভ্যালিতে বন্ধের মুখে উত্তরের ‘কাওয়া’ গ্রিন টি
প্রতিদিন | ০৯ মে ২০২৫
বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: পহেলগাঁও কাণ্ডের জের। বন্ধের মুখে কাশ্মীরে ‘কাওয়া’ নামে প্রসিদ্ধ উত্তরের গ্রিন টি উৎপাদন। আতঙ্কে টিউলিপ ভ্যালি পর্যটকশূন্য হতে কমেছে ওই চায়ের চাহিদা। উৎপাদকদের শঙ্কা দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বিপুল পরিমাণ গ্রিন টি নষ্ট হতে পারে।
উত্তরের গ্রিন টি টিউলিপ ভ্যালির পর্যটন শিল্পের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়ে ‘কাওয়া’-র পেয়ালায় চুমুক দেননি, এমন পর্যটকের সংখ্যা হাতে গোনা। কিন্তু অনেকেরই জানা নেই কাওয়ার মূল উপাদান উত্তরের গ্রিন টি। এখানকার পাহাড়-সমতলের অন্তত ৩০টি চা বাগানে গ্রিন টি অর্থাৎ সবুজ চায়ের চাষ হয়ে থাকে। চা বণিকসভাগুলো সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাগানগুলো থেকে যে পাতা উৎপাদন হয়, সেটা দিয়ে বছরে প্রায় ২০ মিলিয়ন কেজি গ্রিন টি তৈরি হয়। যার ৮০ শতাংশের ক্রেতা জম্মু-কাশ্মীর। টিউলিপ ভ্যালিতে বিশেষভাবে তৈরি ‘কাওয়া চা’ দেশি-বিদেশি পর্যটক মহলে খুবই আকর্ষণীয়।
এতদিন সাড়ে চারশো থেকে পাচশো টাকা কেজি দামে গ্রিন টি গিয়েছে কাশ্মীরে। কিন্তু গত ২৪ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটকের প্রাণহানীর পর পুরো ছবি পালটে গিয়েছে। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান সতীশ মিত্রুকা বলেন, “উত্তরের গ্রিন টি-র একমাত্র বাজার কাশ্মীর। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর চারশো টাকা কেজি দামেও গ্রিন টি কাশ্মীরে যাচ্ছে না। প্রচুর চা পড়ে আছে। কাশ্মীরে পর্যটক নেই। ওরা চা নিয়ে কি করবে!”
ওই পরিস্থিতিতে উত্তরের গ্রিন টি উৎপাদকদের মাথায় হাত পড়েছে। বেশি বিপাকে পড়েছেন বেশ কিছু ক্ষুদ্র চা চাষি। যারা কাশ্মীর উপত্যকায় ভালো বাজার দেখে কয়েক বছর থেকে গ্রিন টি উৎপাদন শুরু করেছেন। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর বাজারের পরিস্থিতি দেখে, তাঁরা কোথায় ওই চা বিক্রি করবেন, সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী জানান, কাশ্মীর ছাড়া গ্রিন টি-র বাজার ভারতের অন্য কোথাও তেমন নেই। উত্তরের ওই চা কাশ্মীরে ‘কাওয়া’ নামে বেশি পরিচিত। দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সেটা খুবই পছন্দ করেন। সেজন্য চাহিদাও বেশি। কিন্তু পহেলগাঁও কাণ্ডের পর সব হিসেব পালটে গিয়েছে। উদ্বেগের সঙ্গে তিনি বলেন, “জানি না এই বাজার কবে ঘুরে দাঁড়াবে।”