• সংঘের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক দিলীপের! তাঁকে নিয়ে কি BJP-RSS-এর অবস্থান ভিন্ন?
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৯ মে ২০২৫
  • দিলীপ ঘোষ ইস্যুতে কি বিজেপি আর আরএসএস-এর অবস্থান ভিন্ন? না, আনুষ্ঠানিকভাবে এমন কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু, গত কয়েক দিনের ঘটনা পরম্পরায় রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।

    কেন বলা হচ্ছে একথা? কারণ, দিলীপ ঘোষ নিজেই সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তাঁকে নিয়ে আরএসএস নেতৃত্বের মধ্যে কিছু সংশয় বা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু, সম্মুখ সাক্ষাৎ ও দীর্ঘ রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর সেসব মিটে গিয়েছে। এবং সংঘের রাজ্য নেতৃত্ব নাকি তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে।

    অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপির সর্বশেষ সাংগঠনিক বৈঠকে, যেখানে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসলও উপস্থিত ছিলেন, সেখানে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজ্যে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের নেতৃত্ব দেবেন বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেই বৈঠকে দিলীপ যেমন আমন্ত্রিত ছিলেন না, তেমনই দিলীপকে এই বৈঠক থেকেই দলীয় নেতৃত্বে ব্রাত্য করে দেওয়া হল কিনা, সেই প্রশ্নও ইতিমধ্য়েই উঠছে।

    যদিও দিলীপ নিজে বলছেন, 'ওঁরা দলের ঘোষিত নেতা। সুকান্ত, শুভেন্দুর কথাই তো বনসলজি বলবেন। এটাই তো স্বাভাবিক। আমি তো এখন নেতা নই। বিজেপির একজন কর্মী হিসেবে আমিও ওঁদের জয়গানই গাইব।'

    এবার আসা যাক দিলীপ-সংঘ বৈঠকের বিষয়টি নিয়ে। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণে দিলীপ ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদার দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে যান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে দিলীপের ছবি প্রকাশ্যে আসতেই মূলত গেরুয়া শিবিরের একাংশ তেড়েফুঁড়ে দিলীপের বিরুদ্ধে মাঠে নামে!

    অন্যদিকে, সুকান্ত মজুমদার, শমীক ভট্টাচার্যের মতো রাজ্য নেতারাও বুঝিয়ে দেন, দিলীপের এই মন্দির দর্শনে দলের সায় বা সমর্থন নেই। এরপর দিলীপকে সরাসরি আক্রমণ করতে শুরু করেন সৌমিত্র খাঁ, অর্জুন সিংয়ের মতো বিজেপি নেতারা। যাঁরা নিজেরাই এক বা একাধিকবার দলবদল করেছেন। ঠিক এই বিষয়টিকে সামনে এনেই এইসব 'নব্য বিজেপি' নেতাদের তুলোধনা করেন দিলীপ। মাঝখান থেকে তৃণমূলের তরফে দু-একটি মন্তব্যও উড়ে আসে। সব মিলিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে দিলীপ ঘোষকে নিয়ে তুমুল আলোড়ন শুরু হয়। এমনকী, দিলীপ ঘোষ দলবদল করতে পারেন বলেও কিছু রটনা শোনা যায়।

    সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা তথ্য অনুসারে, এই প্রেক্ষাপটে দিন কয়েক আগেই রাজ্যে সংঘের সদর দফতর 'কেশব ভবন'-এ দিলীপ ঘোষকে ডেকে পাঠানো হয়। প্রায় তিনঘণ্টা সেখানে সংঘের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন দিলীপ। সেই বৈঠকেই সংঘের কাছে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন তিনি। সাফ জানিয়ে দেন, তিনি মোটেও দলবদল করছেন না। কিন্তু, দলের মধ্যে কেউ তাঁকে অপমানিত করলে, সেটাও বরদাস্ত করবেন না।

    এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে দিলীপ বলেন, 'আমি আরএসএসের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁদের কিছু কনফিউশন তৈরি হয়েছিল। আমি পরিষ্কার করে আরএসএসের শীর্ষ নেতাদের জানিয়েছি, আপ‍নারা আমাকে যে কাজ করতে বিজেপিতে পাঠিয়েছিলেন, সেটাই করছি। যে দিন চলে আসতে বলবেন, সেদিনই চলে আসব। আজ বললে আজই। কিন্তু আমার সঙ্গে নোংরা রাজনীতি করলে আমি চুপ করে থাকব না।'

    প্রসঙ্গত, দিলীপ ঘোষ কিশোর বয়স থেকেই আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত। সেখান থেকেই তাঁর রাজনীতিতে আসা। এবং এটা ঐতিহাসিক সত্য যে - তিনি রাজ্য বিজেপির সভাপতি থাকাকালীনই বাংলায় সেরা নির্বাচনী ফলাফল করেছে পদ্ম শিবির। যদিও তা সত্ত্বেও আগামী নির্বাচনে তাঁকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে বিজেপি! এই প্রেক্ষাপটে আরএসএস শীর্ষ নেতৃত্ব নাকি দিলীপের 'পাশে থাকার' বার্তা দিয়েছেন। তাই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি দিলীপকে নিয়ে সহমত হতে পারছে না আরএসএস ও বিজেপি নেতৃত্ব?
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)