• গোয়েন্দা নজরে কিছু সন্দেহভাজন সংগঠন
    আনন্দবাজার | ০৯ মে ২০২৫
  • পাকিস্তানের সঙ্গে অশান্তির আবহে সীমান্তবর্তী রাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গকে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রশাসনের খবর, এর মধ্যেই গোয়েন্দাদের উদ্বেগে ফেলেছে কয়েকটি সংগঠন। তাদের দেশবিরোধী বক্তব্য এবং বিভিন্ন সংস্রব দেখে গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, ঘুরপথে জঙ্গি সংগঠন ফের জাল বিছোতে চাইছে রাজ্যে। অদূর ভবিষ্যতে ভোট প্রক্রিয়াতেও সেই সব সংগঠন ঢুকবে কি না, তা নিয়েও খোঁজখবর শুরু করেছে কেন্দ্র এবং রাজ্যের গোয়েন্দাবাহিনী।

    গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে জঙ্গিদের ধরপাকড় হওয়ায় কিছু সামাজিক এবং রাজনৈতিক সংগঠনের আড়ালে দেশবিরোধী কার্যকলাপ শুরু হয়েছিল। এ রাজ্যের মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে তেমন কিছু সংগঠনের গতিবিধিও ধরা পড়েছিল। রাজ্যের সাম্প্রতিক অশান্তিতেও সেই সব সংগঠনের ছায়া দেখতে পেয়েছেন গোয়েন্দারা। এক গোয়েন্দাকর্তার দাবি, ‘‘সম্প্রতি সেই সব সংগঠন রাজ্যের বাকি জেলাগুলিতেও ছড়িয়েছে। কলকাতা লাগোয়া জেলা, দুই ২৪ পরগনাতেও তাদের অস্তিত্ব জানা গিয়েছে।’’

    সূত্রের দাবি, এক সময় এই সংগঠনগুলি নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে যেত। কিন্তু গৌড়বঙ্গের সংগঠন গাঙ্গেয় বঙ্গে শিকড় ছড়াত না। তেমনই গাঙ্গেয় বঙ্গের সংগঠন উত্তরবঙ্গ নিজেদের ভিত্তি তৈরি করত না। কিন্তু এ বার সেই ছবি বদলাচ্ছে। এক গোয়েন্দা অফিসারের প্রশ্ন, ‘তবে কি আগামী দিনে এরা কোনও ভাবে নির্বাচনে যুক্ত হতে চাইছে?’

    গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, এ রাজ্যে বারবারই বাংলাদেশি জঙ্গিদের ঘাঁটি সামনে এসেছে। তার উপরে সে দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ভারতবিরোধী কার্যকলাপের আশঙ্কা আরওবেড়েছে। এই সময়ে বিভিন্ন ছাপোষা সংগঠনের মধ্যে দিয়ে জঙ্গি মতাদর্শ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ছড়ানো হতে পারে বলে আশঙ্কা। এক গোয়েন্দা-কর্তার বক্তব্য, ‘‘মালদহে জেএমবি এবং কয়েক মাস আগেই মুর্শিদাবাদে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিম বা এবিটি-র খোঁজ মিলেছিল। তাদের কোনও সদস্য ভেক বদলে ধর্মীয় বা সামাজিক সংগঠনে ঢুকেছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।’’

    গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, বাংলাদেশে পালাবদলের পর সে দেশে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের গতিবিধি বেড়েছে। তাই সীমান্তের এ-পারে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের ‘সহমর্মী’ সংগঠনগুলির গতিবিধি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গোয়েন্দা অফিসারেরা এ-ও দাবি করছেন যে এ রাজ্যে ধরপাকড়ের জেরে জেএমবি জঙ্গিরাই এবিটি-র সংগঠন গড়ে তুলেছিল। সেই চক্রে একটি বিশেষ সন্দেহভাজন সংগঠনের উপস্থিতিও টের পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। তবে যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে ধরপাকড় হয়নি। এক গোয়েন্দা-কর্তা বলছেন, ‘‘এমন উদাহরণও আছে যে কোনও একটি সংগঠন নিষিদ্ধ হওয়ার পরে তার সদস্যেরা অন্য একটি সংগঠনের আড়ালে কাজ করছে। সেই সংগঠনের উপরেও নজররাখা হয়েছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)