• লালবাজারে পোর্টালের ‘মিসিং পার্সনস’ বিভাগই দিচ্ছে ভুল তথ্য, বাড়ছে বিভ্রান্তি
    বর্তমান | ১০ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঘটনা ১: কালীঘাট পুলিস স্টেশনে অভিযোগ জমা পড়েছে ২৬ এপ্রিল। কলকাতা পুলিসের পোর্টাল বলছে, নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে ১ এপ্রিল। সেই পোর্টালেই আবার উল্লেখ রয়েছে, ‘৩০ এপ্রিল থেকে পাওয়া যাচ্ছে না কালীঘাট থানা এলাকার বাসিন্দা দিশা সাউকে।’ 

    ঘটনা ২: নিউ আলিপুর থানা এলাকার বাসিন্দা কমলা মণ্ডল নিখোঁজ।  এসএসএসকেএম হাসপাতালের ভিতর থেকে উধাও ৬৫ বছরের বৃদ্ধা। ভবানীপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পোর্টালে তাঁর ছবিও আপলোড করা হয়েছে। কিন্তু, ‘লিঙ্গ’ কলামে লেখা ‘পুরুষ’। ছবি ভুল, নাম ভুল নাকি লিঙ্গ ভুল? বিভ্রান্তি চরমে।

    ঘটনা ৩: ২৩ এপ্রিল কড়েয়া থানা এলাকা থেকে উধাও হয়ে যায় ১৫ বছরের এক কিশোরী। তিলজলা শিবতলা লেনের বাসিন্দা ওই নাবালিকার খোঁজ পাওয়ার উদ্দেশে পুলিসের পোর্টালে লেখা হয়েছে কিশোরী ‘পুরুষ’! 

    কলকাতা পুলিসের দেওয়া নিখোঁজ খতিয়ান এমনই ভুলে ভরা! সম্প্রতি এরকম একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে, যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সব মহলে। কোথাও লিঙ্গ ভুল, কোথাও আবার ঠিকানা। কোথাও আবার নামেই বিস্তর গোলমাল। ইতিমধ্যে বিষয়টি লালবাজারের উচ্চপদস্থ কর্তাদের নজরে এসেছে। দ্রুত সমস্ত ভুলভ্রান্তি শুধরে নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। 

    কলকাতা পুলিসের সরকারি পোর্টালে রয়েছে ‘মিসিং পার্সনস’ বিভাগ। সেখানে ক্লিক করলেই শহরের নিখোঁজ সংক্রান্ত সমস্ত অভিযোগ দেখা যায়। কে, কবে, কোথা থেকে নিখোঁজ হচ্ছেন, সেই সময়ে কী পোশাক পরেছিলেন তিনি, সবটাই উল্লেখ থাকে সেখানে। সেই সঙ্গে থাকে নিখোঁজের ছবি। লালবাজার সূত্রে খবর, পোর্টাল থেকে জানার পর নিখোঁজের সন্ধান দিয়েছেন সাধারণ মানুষ, এমন উদাহরণ বিরল নয়। কিন্তু, সম্প্রতি পোর্টালে যেভাবে ভুল তথ্য আপলোড হচ্ছে, তার ফলে নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা অবধারিত। কলকাতা পুলিস জানাচ্ছে, প্রতি বছর শহর থেকে প্রায় এক হাজার ব্যক্তি নিখোঁজ হন। তার মধ্যে অন্তত ৩০-৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে নিখোঁজদের খোঁজ মেলে পথচলতি সাধারণ মানুষের কাছ থেকেই। বেলেঘাটার বাসিন্দা অর্ণব কর বলেন,‘ পুলিসের পোর্টালে ভুল তথ্য থাকাটা দুর্ভাগ্যজনক। নিখোঁজ সম্পর্কিত তথ্য ভুল থাকলে তাঁর হদিশ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।’ শ্যামপুকুরের সুদীপ সেনের কথায়, ‘অনেকের নাম এমন হয়, যেখানে নামটা পুরুষ নাকি মহিলার, বোঝা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায় অন্যান্য তথ্যগুলি। আরও সতর্ক থাকা উচিত পুলিসের।’ এ প্রসঙ্গে লালবাজারের এক আধিকারিক বলেন, ‘ভুল-ত্রুটি যাতে দ্রুত শুধরে নেওয়া হয়, তার জন্য নির্দিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)