বাঘের সঙ্গে লড়াইয়ে শ্বদন্ত ভেঙেছিল বাঘিনীর, এখন খায় বোনলেস চিকেন
বর্তমান | ১০ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বাঘের সঙ্গে লড়াইয়ে দাঁত ভেঙে গিয়েছে বাঘিনীর। ভোঁতা হয়ে গিয়েছে শ্বদন্ত। ফলে বোনলেস (হাড় ছাড়া) মাংস খায়। এমনিতে শিকার মেরে কড়মড় করে হাড় চিবিয়ে খেতে অভ্যস্ত রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। কিন্তু ঝড়খালি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রের এই বাঘিনীর দাঁত ভাঙা বলে হাড় চিবতে পারে না। জানা গিয়েছে, বাঘিনীর দু’টি ক্যানাইন (শ্বদন্ত) ভেঙে গিয়েছে। দাঁতের ছুঁচলো অংশ ভেঙে যাওয়ায় তা গিয়েছে ভোঁতা হয়ে। তাই এখন সে বোনলেস চিকেন বা বিফ দিয়ে খাওয়াদাওয়া সারছে। চিকিৎসকরা জানান, বাঘটিকে সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। অন্য কোনও বাঘের সঙ্গে মারামারি করতে গিয়ে বা দুর্ঘটনার কারণে সেটির সামনের ক্যানাইন দাঁত দু’টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শক্ত হাড় সমেত মাংস ভেঙে চিবিয়ে খেতে সমস্যা হচ্ছিল। তা দেখার পর এখন ওকে নরম মাংস দেওয়া হচ্ছে। ফলে কোনও সমস্যা নেই। তৃপ্তি করে সাবার করে দিচ্ছে কেজি কেজি মাংস। বাঘিনীটির ১০ বছর বয়স। তাকে আর জঙ্গলে ছাড়া যাবে না। তার কারণ ভাঙা দাঁত। শিকার ধরে খাওয়ার ক্ষমতা তার আর নেই।
এখনও চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বাঘিনীকে। তাকে আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে ঝড়খালি আনা হয়েছিল। আলিপুর চিড়িয়াখানায় কংক্রিটের মধ্যে কৃত্রিম পরিবেশে বহুদিন কাটিয়েছে সে। ঝড়খালিতে নতুন জায়গায় মানিয়ে নিতে পারবে কি না তা পর্যবেক্ষণ করতে চাইছেন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকরা। আপাতত পৃথক একটি বন্ধ ঘরে রাখা হয়েছে প্রাণীটিকে। বর্তমানে এই পুনর্বাসন কেন্দ্রে সুন্দর ও সোহিনী নামে দু’টি বাঘ রয়েছে। তারা এখানকার পরিবেশ ও আদবকায়দার সঙ্গে অভ্যস্ত। কখন খাবার দেওয়া হয় সেটা তারা জানে। তাই এনক্লোজারের বাইরে বিচরণ করে। ঠিক সময় খাঁচায় ফিরে আসে। কিন্তু নতুন এই বাঘিনীর ক্ষেত্রে এই টাইম টেবিল মেনে চলার জন্য সময় লাগবে। তাই এখনই যদি তাকে এনক্লোজারের বাইরে ছেড়ে দেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে হয়তো দেখা যাবে যে, সেখানেই সারাদিন শুয়ে বসে রইল। ফলে সঠিক সময় তার খাওয়া-দাওয়া হবে না। তাই এখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া অভ্যাস করানো হচ্ছে তাকে। নিজস্ব চিত্র