এই সময়: ২৩ এপ্রিলের পর ৯ মে — ১৬ দিন পরে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ফের ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে পৌঁছে গেল। তবে ১৬ দিন আগে শহরের তাপমাত্রা ছিল ৩৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শুক্রবারের কলকাতার পারদ সেখান থেকে আরও কিছুটা এগিয়ে গিয়ে ৩৮.৬ ডিগ্রিতে উঠল।
সেই হিসেবে এটাই এখনও পর্যন্ত এই মরশুমের উষ্ণতম দিন। আর এই দিনটাতেই আলিপুর হাওয়া অফিস নতুন করে তাপপ্রবাহের সতর্কতা ঘোষণা করল দক্ষিণবঙ্গে।
কলাইকুণ্ডা ৪২.৩ ডিগ্রি, সিউড়ি ৪০ ডিগ্রি, মালদা ৩৯.৯, সল্টলেক ৩৯.৮, দমদম ও শ্রীনিকেতন ৩৯.৪, পুরুলিয়া ৩৯.৩ — বাতাস থেকে ঝড়বৃষ্টি নামানোর উপযুক্ত জলীয় বাষ্পটুকু বিলুপ্ত হতেই শুরু হয়ে গেল গরমের দাপট। তবে শুক্রবার নাকি শুধুই ‘ট্রেলার’, আসল ‘পিকচার’ শুরু হতে চলেছে আজ শনিবার থেকে — অন্তত হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস তেমনই।
সামনেক কয়েক দিনের আবহাওয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, ১৩ মে অর্থাৎ মঙ্গলবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের ছ’টি জেলায় তাপপ্রবাহের আশঙ্কা খুব বেশি। এই ছ’টি জেলার মধ্যে রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম মেদিনীপুর।
সমতল এলাকায় কোনও জায়গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যদি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেশি হয় এবং সেই তাপমাত্রা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত ৪.৫ ডিগ্রি উপরে থাকে, তা হলে আবহাওয়াবিজ্ঞানের পরিভাষায় তাকে ‘তাপপ্রবাহ’ বলে উল্লেখ করা হয়।
এই ছ’টি জেলা তাপপ্রবাহ পরিস্থিতিতে জ্বললেও দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলোর জন্য ‘অন্য ব্যবস্থা’ প্রকৃতিদেবীর। বাতাসে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের প্রভাবে এই সব জেলাগুলোয় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি চরমে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শুক্রবারের কলকাতা এবং সংলগ্ন অনেকটা এলাকার অবস্থা সেই পূর্বাভাসেরই আগাম ইঙ্গিত দিয়েছে। এ দিন শহরের সর্বোচ্চ আপেক্ষিক আর্দ্রতা যেমন ৯২ শতাংশ ছিল, তেমনই সর্বনিম্ন আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৩৬ শতাংশে নেমে গিয়েছিল।
বাতাসের জলীয় বাষ্পের ধারণক্ষমতা এই বিরাট ব্যবধানে ওঠা–নামা করার ফলে একদিকে যেমন ঘামে নাজেহাল হয়েছেন বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা, তেমনই অন্য দিকে শুকনো গরমে চামড়ায় জ্বালা ধরানো অনুভূতিও ভোগ করেছেন। নতুন করে ঝড়বৃষ্টি না–নামা পর্যন্ত এই অবস্থা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা তেমন নেই বললেই চলে। তাই আপাতত সামনের কয়েকদিন কষ্টই পেতে হবে দক্ষিণবঙ্গকে।