এই সময়: দৈনিক যানবাহন ও পথচারীদের ভিড়ে ঠাসা ধর্মতলার ছবি এ বার হয়তো পাল্টাতে চলেছে। কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায় ভূগর্ভস্থ কার পার্কিং স্পেস তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। ওই পার্কিং স্পেসের পাশে থাকবে ভূগর্ভস্থ পথও। যা দিয়ে পথচারীরা ধর্মতলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে পারবেন নির্বিঘ্নে।
এই পরিকল্পনা কার্যকর করা গেলে রাস্তার উপরে চাপও অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই নিয়ে বুধবার কলকাতা পুরসভার সদর কার্যালয়ে বৈঠক করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা ও পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে প্রকল্পের ডিটেল্ড প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) নিয়ে আলোচনা হয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পের বাস্তবায়নে পুরসভার খরচ হবে ৪৫৬ কোটি টাকা। ভূগর্ভস্থ কার পার্কিং স্পেসে একসঙ্গে প্রায় ৯০০টি গাড়ি পার্ক করা যাবে।
কলকাতায় মেট্রোরেল সম্প্রসারণের পরিকল্পনার পুরোদস্তুর বাস্তবায়ন হলে গ্রেটার কলকাতার সঙ্গে জুড়ে যাবে ধর্মতলা। ফলে, এখনকার তুলনায় ধর্মতলায় গাড়ি ও পথচারীর চাপ সেই সময়ে কয়েক গুণ বাড়বে। সে কথা মাথায় রেখে সেই চাপ যাতে কমানো যায়, তার জন্যই পুরসভার এই পরিকল্পনা।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বুধবারের বৈঠকে কলকাতা পুলিশের তরফে প্রস্তাবিত প্রকল্পে খানিকটা বদল আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কলকাতা পুলিশ জানায়, কার পার্কিং স্পেসের পাশ দিয়ে পথচারীদের জন্য আলাদা একটা রাস্তা তৈরি হলে ধর্মতলার দুই ব্যস্ত মোড়— ডোরিনা ক্রসিং ও চৌরঙ্গির চাপ অনেকটাই কমবে।
লালবাজারের কর্তাদের যুক্তি ছিল, এই পরিকল্পনা কার্যকর করা গেলে ইডেন গার্ডেন্সে খেলা দেখতে যাওয়ার সময়ে পথচারীদের ডোরিনা ক্রসিং হেঁটে পেরোতে হবে না— তাঁরা ভূগর্ভস্থ পথ ধরতে পারবেন এবং তাতে ধর্মতলায় সিগন্যালের ব্যবহার কমিয়ে গাড়ির গতিও অনেকটা বাড়ানো যাবে।
কলকাতা পুলিশের এই প্রস্তাব শুনে মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীও প্রকল্পের ডিপিআর খানিকটা বদলাতে বলেন প্রকল্পের সমীক্ষক সংস্থাকে। কলকাতা পুরসভার এক শীর্ষ আধিকারিকের বক্তব্য, ‘প্রস্তাবিত কার পার্কিং স্পেসের চারটি রাস্তা চার দিক দিয়ে বেরোবে। ইডেন গার্ডেন্স, ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড এবং চৌরঙ্গি ও ডোরিনা ক্রসিং— এই চার দিকে চারটি করে রাস্তা। এতে সাধারণ মানুষের যাতায়াতেও অনেক সুবিধে হবে।’
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্প নিয়ে মেট্রোরেলের কর্তাদের আলোচনা করা হবে। কারণ, সম্প্রসারিত মেট্রোরেল প্রকল্পের সঙ্গে ধর্মতলার প্রস্তাবিত পার্কিং স্পেসের এই প্রকল্প যুক্ত করারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুরসভার এক শীর্ষ অফিসার বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো, ধর্মতলার দৈনন্দিন যানবাহন ও পথচারীদের চাপটাকে ছড়িয়ে দেওয়া। তা হলে ডোরিনা ও চৌরঙ্গির মতো ব্যস্ত ক্রসিংয়ে যানবাহন চলাচল অনেক মসৃণ হবে।’