শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ অশান্তির সময় বাবা-ছেলে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য। অশান্তির জের নয়, জমি বিবাদের কারণে খুন হয়েছেন জাফরাবাদের বাবা-ছেলে! শুক্রবার রাতে ঝাড়খণ্ড থেকে আরও এক মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে, দাবি করল পুলিশ। এই ঘটনায় মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ঝাড়খণ্ডের পাকুড়া এলাকায় অভিযান চালান সিটের সদস্যরা। সেখান থেকেই হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাস খুনের অন্যতম অভিযুক্ত মূল অভিযুক্ত হজরতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে দু’জনকে খুনের পিছনে মূল মাথা এই হজরতই। পুলিশের দাবি, ধৃত জেরায় স্বীকার করেছে জাফরাবাদে খুন হওয়া বাবা ও ছেলের সঙ্গে তার জমি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই বিবাদ চলছিল। আন্দোলনের ও তা ঘিরে অশান্তির সুযোগ নিয়ে হজরত কিছু দুষ্কৃতীর সঙ্গে মিলে বাবা ও ছেলেকে খুন করে।
জানা গিয়েছে, জাফরাবাদে খুন হওয়া বাবা ও ছেলের ওই গ্রামে জমি ছিল। সেই জমিতে হজরত নিজের বাড়ির জন্য বিদ্যুতের পোল বসাতে ও নর্দমা নির্মাণের কাজ করতে চেয়েছিল। কিন্তু বাবা ও ছেলে তাতে নারাজ ছিলেন। তাতেই ওই পরিবারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয় হজরতের। আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে বাবা-ছেলেকে খুন করে হজরত সেই জমি দখলের পরিকল্পনা করেছিল বলে অভিযোগ।
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার এক আধিকারিক জানান, “জাফরাবাদে বাবা ও ছেলেকে খুন করার পর হজরত ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের একটি গোপন ডেরায় লুকিয়ে ছিল। শুক্রবার রাতে সেখানেই অভিযান চালায় সামশেরগঞ্জ থানার একটি বিশেষ দল।” জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার অমিতকুমার সাউ জানান, “ধৃত ওই ব্যক্তিকে জঙ্গিপুর আদালতে পেশ করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ওয়াকফ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের সুতি ও সামশেরগঞ্জের একাধিক এলাকা। সেই সময় জাফরাবাদে বাবা-ছেলেকে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করে রাজ্য। তদন্তে নেমে সুতি ও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে একের পর এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনায় এখনও অবধি মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হল। এখনও দুই অভিযুক্ত পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।