কীভাবে OBC সংরক্ষণ? উচ্চ মাধ্যমিকে সরকারি স্কুলগুলিতে থমকে গেল ভর্তি প্রক্রিয়া!
হিন্দুস্তান টাইমস | ১০ মে ২০২৫
কলকাতা ও জেলায়, রাজ্যের যেখানে যত উচ্চ মাধ্যমিক সরকারি স্কুল রয়েছে, সর্বত্রই আপাতত স্থগিত হয়ে গেল ভর্তি প্রক্রিয়া। কেন একথা বলা হচ্ছে? সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা তথ্য অনুসারে, রাজ্যের স্কুলশিক্ষা অধিকরণ বিভাগের এক যুগ্ম অধিকর্তা সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের নির্দেশ পাঠিয়েছেন, যাতে আপাতত তাঁরা উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির জন্য আবেদনকারীদের মেধাতালিকা বা মেরিট লিস্ট প্রকাশ না করেন।
যার অবশ্যম্ভাবী ফল হল - ওই স্কুলগুলিতে আপাতত উচ্চ মাধ্য়মিকের ভর্তি প্রক্রিয়া হচ্ছে না। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি সংক্রান্ত সংরক্ষণ নিয়ে অস্পষ্টতার জেরেই এই ঘটনা বলে সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে।
উল্লেখ্য, এবছর মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হয়েছে গত ২ মে । তারপরই কলকাতার হিন্দু, হেয়ার, সংস্কৃত এবং বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের মতো উচ্চ মাধ্যমিক সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি সমস্ত জেলা মিলিয়ে রাজ্যের মোট ৬২টি স্কুলে কেন্দ্রীয়ভাবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হয়।
পূর্ববর্তী যে নির্দেশ ছিল, সেই অনুসারে - গত ৩ মে থেকে আজকের মধ্যে এই স্কুলগুলিতে ভর্তির আবেদনপত্র সংগ্রহ ও তা জমা করার কথা ছিল। এরপর আগামী ১৩ মে-র মধ্যে আবেদনকারীদের প্রাপ্ত নম্বর অনুসারে কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগে ভর্তির মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হত স্কুলগুলিকে। মেরিট লিস্টে যাদের নাম থাকবে, সেই ছাত্রছাত্রীদের আগামী ১৪ মে থেকে ১৯ মে-র মধ্যে সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট স্কুলে গিয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া সেরে ফেলার কথা ছিল। কিন্তু, আপাতত মেধাতালিক প্রকাশ করা যাবে না। ফলত, কেউ নতুন স্কুলে ভর্তিও হতে পারবে না।
এই বিষয়টি সামনে আসার পরই প্রবল বিপাকে পড়েছেন সল্টলেকের বেগম রোকেয়া স্মৃতি বালিকা বিদ্যামন্দির, বেথুন কলেজিয়েট স্কুল, কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। সংবাদমাধ্যমে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষিকা এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষিকাদের যে বক্তব্য উঠে এসেছে, তা থেকে জানা গিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে ওবিসি সংরক্ষণ মানা বাধ্যতামূলক হলেও বর্তমানে এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। ফলে, কীভাবে ওবিসি সংরক্ষণ মেনে পড়ুয়াদের ভর্তি করানো হবে, তা রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছিলেন বহু স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকারা।
তারই জেরেই হঠাৎ সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকাটি পাঠানো হয় বলে মনে করা হচ্ছে। স্কুলশিক্ষা অধিকরণ বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত স্কুলগুলি মেধাতালিকা প্রকাশ করতে পারবে না। তাদের সরকারি নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, এই বিষয়ে কথা বলার জন্য স্কুলশিক্ষা কমিশনার ও সরকারি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত যুগ্ম অধিকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, এই গোটা ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, এমনিতেই আজকালকার দিনে সরকারি এবং বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের ভর্তি লাগাতার কমছে। তার উপর যদি এই ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, তাহলে পড়ুয়ার সংখ্যা আরও কমবে। যা কখনও কাম্য নয়।