দেশের পরিস্থিতি আপৎকালীন, আন্দোলন তুলে নিন! ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের চিঠি পুলিশের
হিন্দুস্তান টাইমস | ১০ মে ২০২৫
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানের গোঁয়ার্তুমির জেরে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সংঘাতে জড়াতে বাধ্য হয়েছে ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনা। এই প্রেক্ষাপটে সারা দেশ সতর্ক রয়েছে। ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে প্রত্যেকটি রাজ্যের সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, যাতে তারা ১৯৬৮ সালের অসামরিক প্রতিরক্ষা বিধির ১১ নম্বর ধারা অনুসারে প্রদত্ত জরুরি অবস্থাকালীন ক্ষমতা বলবৎ করে!
যার অর্থ হল, যেকোনও আপতকালীন পরিস্থিতিতে আমজনতাকে রক্ষা করা, সমস্ত সম্পত্তির সুরক্ষা প্রদান এবং জল, বিদ্যুৎ ও পরিবহণের মতো প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি সচল রাখতে সংশ্লিষ্ট সরকার বা প্রশাসন সমস্ত জরুরি পদক্ষেপ করতে পারবে। এর থেকেই স্পষ্ট যে এই সময় পুলিশ, প্রশাসনকে কতটা বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। সরকারি ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সমস্ত জরুরি ব্যবস্থাপনায় কর্মী ও আধিকারিকদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সকলকেই যেকোনও মুহূর্তে যেকোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে এবার সল্টলেকের বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থানরত চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষক শিক্ষিকারদের বিক্ষোভ প্রত্যাহার করার আবেদন জানাল বিধাননগর পুলিশ। সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা তথ্য অনুসারে, এই বিষয়ে গতকাল পাঠিয়েছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট।
পুলিশের বক্তব্য হল, বর্তমানে সারাদেশ এক বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনকে বাড়তি অনেক দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। তারা অন্য অনেক কাজে ব্যস্ত রয়েছে। এর ফলে আগামী দিনে আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা ব্যাহত হতে পারে। এমনকী, পুলিশের তরফে আন্দোলনকারীদের যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তাতে সারা দেশে উদ্ভূত জরুরি অবস্থাকালীন পরিস্থিতির কথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
যদিও সংবাদমাধ্যমে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা গত ৭ তারিখ থেকে এই অবস্থানে বসেছেন। তাঁদের সঙ্গে সরকারি কোনও আধিকারিক বা কোনও প্রতিনিধি কথা বলেননি। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও তাঁদের কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি। তাই, আপাতত তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহার করার কথা ভাবছেন না।
তাঁদের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্রায় সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করার পর রাজ্যের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তরফে যে রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হয়েছে, তা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই করা হয়েছে।
চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আশঙ্কা, তাঁদের ফের পরীক্ষার দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। কিন্তু, তাঁরা আর পরীক্ষা দিতে রাজি নন। তাই, রাজ্যের শিক্ষা দফতর তাঁদের নিয়ে কী ভাবছে, সেটা স্পষ্ট জানতে চান তাঁরা। যতক্ষণ না সেই বিষয়টি পরিষ্কার হচ্ছে, ততক্ষণ আন্দোলন প্রত্যাহার করতে নারাজ সংশ্লিষ্ট মঞ্চ।