ওয়াকফ অশান্তি নয়, জমি বিবাদে খুন জাফরাবাদের বাবা ও ছেলে
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১১ মে ২০২৫
মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদে বাবা ছেলে খুন হওয়ার পিছনে ওয়াকফ অশান্তির কোনও যোগ নেই। একই সময়ে এই ঘটনা ঘটলেও এর পিছনে ছিল জমি নিয়ে বিবাদ। তার জেরেই বাবা ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুষ্কৃতীরা। তদন্তের পর এমনই ঘটনার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ১০ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ঝাড়খণ্ড থেকে আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর এই দাবি করেছে পুলিশ।
মুর্শিদাবাদের ঘটনার তদন্তে গঠিত সিট শুক্রবার গভীর রাতে ঝাড়খণ্ডের পাকুড় এলাকায় অভিযান চালায়। সেখান থেকেই হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাস খুনের মূল অভিযুক্ত হজরতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, জাফরাবাদে বাবা ছেলেকে খুনের পিছনে এই হজরতই ছিল ‘কিং পিন’। পুলিশি জেরার মুখে হজরত স্বীকার করে নিয়েছে, জাফরাবাদে খুন হওয়া বাবা-ছেলের সঙ্গে তার জমি নিয়ে বিবাদ ছিল। এরপর ওয়াকফ আন্দোলন ও অশান্তির সুযোগে সে দুষ্কৃতীদের সহযোগিতায় বাবা ও ছেলেকে খুন করেছে। জঙ্গিপুর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জাফরাবাদে বাবা ও ছেলেকে খুন করার পর হজরত ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের একটি গোপন ডেরায় লুকিয়ে ছিল। শুক্রবার রাতে সেখানেই অভিযান চালায় সামশেরগঞ্জ থানার একটি বিশেষ দল।
জানা গিয়েছে, জাফরাবাদে খুন হওয়া বাবা ও ছেলের ওই গ্রামে জমি ছিল। সেই জমিতে হজরত নিজের বাড়ির জন্য বিদ্যুতের পোল বসাতে ও নর্দমা নির্মাণের কাজ করতে চেয়েছিল। কিন্তু বাবা ও ছেলে তাতে আপত্তি জানায়। তার জেরে ওই পরিবারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয় হজরতের। হজরত ওয়াকফ আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে বাবা ও ছেলেকে খুন করে জমি দখলের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ওয়াকফ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের সুতি ও সামশেরগঞ্জের একাধিক এলাকা। সেই সময় জাফরাবাদের বাবা ও ছেলেকে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে কয়েকজন দুষ্কৃতী। তাঁদের এই খুনের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। রাজ্য সিট গঠন করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। তদন্তে নেমে সুতি ও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে একের পর এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনও পলাতক দুই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।