সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: প্রকাশ্য দিবালোকে শিশুচুরি করে পালাতে গিয়ে ধরা পড়লেন এক মহিলা। শনিবার সকালে মালদহের গাজোল স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা নিয়ে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, স্থানীয়দের তৎপরতায় হাসপাতাল থেকে প্রায় ৩০০ মিটার দূরে গাজোল রেল স্টেশন সংলগ্ন বেলডাঙ্গি এলাকা থেকে অভিযুক্ত মহিলা সহ শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি জানাজানি হতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের প্রশ্ন হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষী থাকা সত্বেও কীভাবে শিশু চুরি হয়? এর পিছনে একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে বলেও তাঁরা দাবি করেছেন। নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ করে বিক্ষুব্ধরা অভিযুক্ত মহিলাকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে হাসপাতালের সামনে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। গাজোল থানার পুলিস বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
ঘটনাস্থলে ছিলেন গাজোল থানার আইসি আশীষ কুন্ডু, বিডিও সুদীপ্ত বিশ্বাস, গাজোল স্টেট জেনারেল হাসপাতালে সুপার অঞ্জন রায় সহ অন্যরা। তাঁরা হাসপাতাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন।
হাসপাতাল এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার গর্ভবতী হাসি সাহা জোয়ারদার হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর বাবার বাড়ি গাজোলে। শ্বশুর বাড়ি পুরাতন মালদহ শহরে। স্বামী সমিত জোয়ারদার ভিনরাজ্যে কাজে গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার হাসি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। শনিবার হাসপাতাল থেকে তাঁর ছুটি হওয়ার কথা ছিল। সেজন্য তিনি শিশুকে একা রেখে কিছু নথি জেরক্স করতে বাইরে যান। ফিরে দেখেন তাঁর সন্তান নেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান হাসি। চারিদিকে তল্লাশি শুরু হয়। পরে স্থানীয়রা বেলডাঙ্গির কাছে শিশুকে উদ্ধার করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মল্লিকা সরকার এবং পঞ্চানন মাহাতো জানান, কয়েকজন একাধিক বাইক নিয়ে একটা শিশুর খোঁজ করছিলেন। আমাদের পাড়ার লোকদের কাছে তাঁরা জানতে চান কাউকে শিশু কোলে নিয়ে যেতে দেখেছেন কি না। কয়েকজন একজন মহিলার কথা বললে ওই ব্যক্তিরা শিশুটি তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করেন। হাসির কথায়, স্থানীয়রা না থাকলে আমার সন্তানকে হয়তো ফিরে পেতাম না।
গাজোল স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার অঞ্জন রায় বলেন, শিশুকে ফিরে পাওয়া গিয়েছে। আমরা সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দীর্ঘদিন ধরে বাউন্ডারি ওয়ালের দাবি করে আসছি। কিছুটা কাজ শুরু হয়েছে। নজরদারির জন্য আরও সিসি ক্যামেরা প্রয়োজন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। গাজোল থানার পুলিস জানিয়েছে, প্রথমে মহিলাকে আটক করা হয়েছিল। পরে অভিযোগ হয়েছে। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পুলিস সূত্রে খবর, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর সন্তান নেই, সেজন্য হাসপাতাল থেকে শিশু নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। নিজস্ব চিত্র