ভরতপুরের সরকারপাড়া গ্রামে পূজিত হয় না মাটির প্রতিমা, বৈশাখ মাসের প্রতি শনিবার কুলদেবতার মন্দিরে অন্নভোগ গ্রহণ করেন গ্রামবাসীরা
বর্তমান | ১১ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, কান্দি: গ্রামে রয়েছে সিংহবাহিনী কুলদেবতার মন্দির। তাই প্রতিটি পরিবারের জন্ম থেকে মৃত্যুর অনুষ্ঠান ওই মন্দিরে গিয়েই করতে হয়। এমনকী কুলদেবতার মন্দির থাকার কারণে ভরতপুর ১ ব্লকের সরকারপাড়া গ্রামে কোনও মাটির প্রতিমা পূজিত হয় না। বৈশাখের প্রতি শনিবার মন্দির থেকে অন্নভোগ নিয়ে বাড়িতে ফিরতে হয় পরিবারগুলিকে। প্রসঙ্গত, ওই গ্রামে প্রায় ২৫০টি পরিবারের বসবাস। অধিকাংশ বাসিন্দার পেশা কৃষিকাজ। তবে গ্রামেই রয়েছে প্রাচীন সিংহ বাহিনীর মন্দির। সিংহবাহিনী দেবী হলেন গ্রামের কুলদেবতা। তাই জন্ম থেকে মৃত্যুর সমস্ত ক্রিয়াকর্ম এই মন্দিরের দেবীকে সংকল্প করেই করতে হয়। তবে বড় ব্যাপার হল গ্রামটিতে কোন মাটির তৈরি দেবতার পুজো করা হয় না। বছরের বিভিন্ন তিথিতে কুলদেবতাকেই বিভিন্ন রূপে পুজো করতে হয়। তাই কুলদেবতা কখনও দুর্গা, কখনও সরস্বতী রূপে পুজিত হন। মন্দিরের সেবাইত কার্তিকচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, বহু বছর ধরে এই রীতিই চলে আসছে গ্রামে। কেউ নিয়ম ভাঙার সাহস আজ পর্যন্ত দেখাতে পারেননি। বহু দূর থেকেও মন্দিরে ভক্তরা আসেন। গ্রামে কোন মাটির প্রতিমার পুজো হয় না। কথিত, বহু বছর আগে একটি পরিবার নিয়ম ভেঙে মাটির প্রতিমা তৈরি করে পুজো করেছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিমায় ফাটল ধরে। কুলদেবী স্বপ্নাদেশ দিয়ে জানান, এমন করার জন্য বাসিন্দাদের চরম ক্ষতি হবে। এরপর থেকে গ্রামে আর মাটির প্রতিমা তৈরি হয় না। এদিকে বৈশাখের প্রতি শনিবার মন্দির থেকে অন্নভোগ নিয়ে বাড়িতে ফিরতেই হয় বাসিন্দাদের। বাসিন্দা সন্দীপ সরকার বলেন, অন্নভোগ কেউ মন্দিরেও বসে খেতে পারেন। আবার ভোগ নিয়ে বাড়িও ফিরতে পারেন। কিন্তু গ্রামের প্রতিটি পরিবারকে এই কাজ করতেই হবে। এটাই গ্রামের নিয়ম।