নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: কাশ্মীরে পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই বীরভূম জেলায় দুই জেএমবি জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেলায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে পুলিস। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। আন্তঃরাজ্য সীমানায় বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে। নাকা তল্লাশিতে জোর দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে সাইবার মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রেও বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের উপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে জেলা পুলিসের সাইবার ক্রাইম বিভাগকেও সতর্ক করা হয়েছে। ‘ভাইটাল ইনস্টলেশন’ এর দিকেও বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে। সেই তালিকায় বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জেলার পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, জেলার সার্বিক নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। আন্তঃরাজ্য সীমানায় বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে। নাকা চেকিংয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে ভাইটাল ইনস্টলেশনগুলির উপর বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জেলার নিরাপত্তায় নজরদারি আঁটোসাঁটো করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশের পরই জেলার রামপুরহাট মহকুমা এলাকা থেকে জেএমবির যোগ সন্দেহে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে এসটিএফ। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগের একাধিক সূত্রও মিলেছে। শুধু এই দু’জন? নাকি জেলার অন্দরে তাদের শাগরেদরা ছড়িয়ে রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জেলার পুলিস কর্তাদেরও ভাবাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যে জেলাজুড়ে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জেলা পুলিস স্থানীয় সোর্স কাজে লাগাতে তৎপর হয়ে উঠেছে। এলাকায় সন্দেহভাজন কোনও ব্যক্তির হদিশ মিললেই দ্রুত থানায় জানাতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে বাড়ি ভাড়া নিয়ে কোনও ‘ছদ্মবেশী’ আস্তানা গেড়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতেও একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে জেলার নানা প্রান্তের হোটেলগুলিতে কাদের আনাগোনা হচ্ছে তাও সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে, আন্তঃরাজ্য সীমানা হয়ে প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকে কে বা কারা এবং কী উদ্দেশে জেলায় ঢুকছে, তা যাচাই করা হচ্ছে। গাড়িগুলির উপরেও নজর রাখা হচ্ছে। পদস্থ পুলিস কর্তাদের উপস্থিতিতে নাকা তল্লাশি চলছে। গোয়েন্দা কর্তারাও যথেষ্ট তৎপর হয়ে উঠেছেন।
পুলিস কন্ট্রোল রুমের উপর এবার বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ইন্সপেক্টর ও সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসারদের তত্ত্বাবধানে কন্ট্রোল রুম পরিচালিত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুম খোলা থাকছে। সেইসঙ্গে, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যাতে কোনও প্রকার ত্রুটি না থাকে, তা নিশ্চিত করতে খোদ পুলিস সুপার নিজে সার্বিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন।