নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পরিসংখ্যান শুনলে শুধু বাংলা কেন, দেশের যে কোনও প্রথম সারির হাসপাতালের কর্তারা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাবেন। পরিসংখ্যান বলছে, পিজি হাসপাতালে এখন দিনে উপকৃত রোগীর সংখ্যা গড়ে ৩০ হাজারের বেশি অর্থাৎ বছরে প্রায় এক কোটি!
রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের আউটডোর, ইন্ডোর, ইমার্জেন্সি, রোগপরীক্ষাকেন্দ্র সহ বিভিন্ন পরিষেবার জায়গা থেকে কত মানুষ উপকৃত হলেন, তা নিয়ে অভ্যন্তরীণ র্যাঙ্কিং করে স্বাস্থ্যদপ্তর। রোজ সেই র্যাঙ্কিং প্রকাশিত হয়। আর একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, শতচেষ্টা করেও পিজিকে র্যাঙ্কিংয়ে স্থানচ্যুত করতে পারছে না অন্য কোনও মেডিক্যাল কলেজই। সারাবছরই দপ্তরের অভ্যন্তরীণ র্যাঙ্কিংয়ে পিজি বা ‘আইপিজিএমঅ্যান্ডইআর’ একনম্বরে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকার জন্য জোর লড়াই অবশ্য অব্যাহত। বছরভর সেই ‘লড়াই’ চলছে মূলত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এন আর এস এবং বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজের মধ্যে। কিন্তু এও দেখা যাচ্ছে, উপকৃত রোগীর সংখ্যার নিরিখে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারী পিজির তুলনায় ঢের ঢের পিছনে। কখনও পিজি’র অর্ধেক, কখনও তিনভাগের একভাগেরও কম!
রাজ্যের ২৪টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং ৪টি মেডিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—সবমিলিয়ে ২৮টি ক্ষেত্রে পরিষেবা সংক্রান্ত পরিসংখ্যান রোজ নথিবদ্ধ করে স্বাস্থ্যদপ্তর। ৪টি মেডিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন, আইডি হাসপাতাল, বি সি রায় শিশু হাসপাতাল এবং চিত্তরঞ্জন শিশু সদন। ৫টি বিষয়ের তথ্য জানা হয়। সেগুলি হল আউটডোর, ইন্ডোর ইমার্জেন্সি, ল্যাব রিপোর্ট, ছুটি এবং কত মানুষ বিনা পয়সায় ওষুধ পান।
উদাহরণস্বরূপ, ১ বছর আগে ২০২৪ সালের ৩ মে এই ৫টি বিষয় মিলিয়ে পিজি থেকে উপকৃত হয়েছিলেন ২৯ হাজার ২৫৮ জন রোগী। দ্বিতীয় স্থানে ছিল এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ (১২ হাজার ৩৪)। তৃতীয় হয়েছিল বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ (১১ হাজার ১৬২ জন)। তিন মাস পর ৮ জুলাই শীর্ষে থাকা পিজি থেকে উপকৃত হন ৩৪ হাজার ১১৫ জন। সেখানে দ্বিতীয় ও তৃতীয় র্যাঙ্কিংয়ে থাকা এন আর এস এবং বর্ধমান মেডিক্যালে যথাক্রমে ১৮ হাজার ৩৯২ জন এবং ১৩ হাজার ৭৩৮ জন রোগী উপকৃত হয়েছিলেন।
এইবার আসা যাক এ বছরের ২ মে’র দিনে। ওইদিনে র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় মেডিক্যাল কলেজগুলি হল পিজি (৩১ হাজার ৬০২), কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ (১৫ হাজার ৮৭৬) এবং বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ (১৪ হাজার ৮০৫ জন)।