পাকিস্তান থেকে বাংলার জওয়ানকে ফেরানো হোক, সংঘর্ষবিরতির পর কেন্দ্রকে ‘চাপ’ কল্যাণের
প্রতিদিন | ১১ মে ২০২৫
সুমন করাতি, হুগলি: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ১৯ দিন পর ভারত-পাক সীমান্তে সংঘর্ষবিরতি। শনিবার দু’দেশের ডিজিএমও পর্যায়ের বৈঠকে এনিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১২ মে পর্যন্ত সীমান্তে সংঘাত বন্ধ থাকবে, ওইদিন ফের ডিজিএমওদের বৈঠক। তবে এই চুক্তির কয়েকঘণ্টার মধ্যে সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। পাক ড্রোন দেখা গিয়েছে পাঞ্জাব, গুজরাটের সীমান্তবর্তী অঞ্চলেও। যদিও অতন্দ্র প্রহরী হয়ে পাকিস্তানের সমস্ত ছক প্রতিহত করেছে ভারতীয় সেনা। এই পরিস্থিতিতে দু’দেশের মধ্যে সাময়িক শান্তির মাঝে পাক মুলুকে ‘আটকে’ থাকা বাংলার বিএসএফ জওয়ানকে ফেরানোর দাবি তুলে আরও একবার কেন্দ্রকে ‘চাপ’ দিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেসবুক পোস্টে তাঁর সাফ বক্তব্য, ‘কোনও ভাবনা বা পরিকল্পনার কথা আর শোনা হবে না। এবার কাজ করতে হবে।’
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার পরে সীমান্ত পাহারা দিতে গিয়ে নিখোঁজ হন হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা, বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউ। পাঞ্জাবের পাঠানকোটে তাঁর পোস্টিং ছিল। সেখান থেকেই নিখোঁজ হন তিনি। মনে করা হচ্ছে, টহলদারির সময়ে ‘ভুল করে’ পাক ভূখণ্ডে প্রবেশ করে পাক সেনার হাতে ‘বন্দি’ হয়েছেন বিএসএফ জওয়ান। স্বামীর খোঁজ না পেয়ে বারবার বিএসএফ, কেন্দ্রেরক কাছে দরবার করেছেন পূর্ণমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী সাউ। কিন্তু লাভ হয়নি। শুধুই মৌখিক আশ্বাস মিলেছে যে তাঁর স্বামীকে ফেরাতে তৎপর কেন্দ্র, বিএসএফ, শিগগিরই ফিরে আসবেন তিনি। তাতে ভরসা না পেয়ে রজনীদেবী পাঠানকোট পর্যন্ত গিয়েছেন। বিফল হয়ে ফিরে এসেছেন। পূর্ণমকে ফেরানোর জন্য একাধিকবার পূর্বাঞ্চলে বিএসএফের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ সুরাহা মেলেনি। তা সত্ত্বেও নিজের সংসদীয় এলাকার জওয়ানের জন্য তিনি লড়েছেন।
এবার ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ যুদ্ধ হাওয়া আপাতত থেমেছে। সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয়েছে দু’দেশ। তাই এখন আর টালবাহানা নয়, পাক সেনার হাতে ‘বন্দি’ বাংলার জওয়ান পূর্ণমকে ফেরানোর জন্য কেন্দ্রকে ‘অ্যাকশন’ নিতে হবে বলে জোরাল দাবি তুললেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেসবুক পোস্টে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, এই আপাত-শান্ত পরিস্থিতিতেই পূর্ণমকে ফেরাতে হবে। ২০ দিন ধরে তাঁর খোঁজ নেই। পরিবার অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে দিন কাটাচ্ছে। এবার এর নিরসন চাই। সাংসদের দাবি, কোনও পরিকল্পনা বা ভাবনাচিন্তা আর নয়, এবার দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে কেন্দ্রকে।