• ‘কুপিয়ে দিল’ বলে তারস্বরে চিৎকার! দ্বিতীয় স্বামীর ধারালো অস্ত্রের কোপে চুঁচুড়ায় ‘খুন’ স্ত্রী
    প্রতিদিন | ১১ মে ২০২৫
  • সুমন করাতি, হুগলি: অসুস্থ স্বামীর ধারালো অস্ত্রের কোপে ‘খুন’ স্ত্রী। শনিবার গভীর রাতে চুঁচুড়ার প্রিয়নগর দক্ষিণ এলাকায় এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য। মৃতের নাম ঝর্ণা ঘোষ। বয়স ৫৮ বছর। রাতের ঘুমের মাঝে স্ত্রীর উপর আচমকা ধারালো অস্ত্র নিয়ে দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী ঝাঁপিয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকেন। তার মধ্যেই কোনক্রমে আত্মরক্ষা করে ঝর্ণাদেবী নিজের ছেলেকে ফোনে বলেন, “আমাকে কুপিয়ে দিল।” এরপরই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। মাঝরাতে তাঁর চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্বামীকে আটক করে পুলিশ।

    চুঁচুড়া কোদালিয়া ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রিয়নগর দক্ষিণ এলাকার বাসিন্দা ঝর্ণা শীল। দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী বছর পঁয়ষট্টির উজ্জ্বল শীলের সঙ্গে তিনি একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। বাড়ি বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালাতেন ঝর্ণাদেবী। তাঁর অর্থই ছিল সংসারের মূল আয়। নিজেদের মধ্যে তেমন কোনও অশান্তি ছিল বলে কেউ জানতেন না। শনিবার রাতে এমন একটা ঘটনা ঘটে গেল যে কেউ বিশ্বাসই করে উঠতে পারছেন না।

    যে বাড়িতে তাঁরা ভাড়া থাকতেন সেই বাড়ির মালিক জানান, শনিবার রাতে হঠাৎ উজ্জ্বল শীলের শরীর খারাপ হয়। তখন বাড়িতে ছিলেন না ঝর্ণাদেবী। তিনি কাজ থেকে ফিরলে তাঁকে জানিয়ে স্বামীর অসুস্থতার কথা জানান বাড়িওয়ালা। ঝর্ণাদেবী তখন স্বামীর শারীরিক অবস্থা দেখার জন্য ঘরে ঢুকতেই উজ্জ্বলবাবু ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে।
    রক্তাক্ত অবস্থাতেই ঝর্ণাদেবী তাঁর প্রথম পক্ষের ছেলেকে ফোন করে বলেন, “আমাকে কুপিয়ে দিল।” চিৎকার শুনে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ছুটে এসে ভয়াবহ দৃশ্য দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন।

    চুঁচুড়া থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঝর্ণাদেবীকে উদ্ধার করে স্থানীয় ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অভিযুক্ত উজ্জ্বল শীলকে পুলিশ আটক করেছে। এলাকাটি ঘিরে রেখে তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম আতঙ্ক এলাকায়। প্রতিবেশীরা অনেকেই বলেন, “এত নৃশংসভাবে কেউ স্ত্রীকে খুন করতে পারে, সেটা ভাবতেই পারছি না।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)