এই সময়, কৃষ্ণনগর: ত্রিপুরাতে কর্মরত বিএসএফ জওয়ান। তাঁর বাড়ি নদিয়ার শান্তিপুরের একটি গ্রামে। গত শুক্রবার সকালে সেই বাড়িতে পাওয়া গেল একটি উড়ো চিরকুট। হুমকি দেওয়া চিরকুটে লেখা আছে, ‘পাকিস্তানের জয়। বাংলাদেশের জয়। ত্রিপুরাই আছে, বাংলাদেশি আটকেছে। বউ বাড়িতে একা আছে।’
শান্তিপুর থানার ঘোড়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা বিএসএফ কর্মী বিশ্বজিৎ নাগের স্ত্রী সুপর্ণা নাগ বাড়িতে এমন উড়ো চিঠি পেয়ে বেশ আতঙ্কিত। শনিবার সকালে শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই জওয়ানের স্ত্রী। ওই মহিলা বাড়িতে একাই থাকেন।
শুক্রবার সকালে দলা পাকানো অবস্থায় বাড়ির উঠোনে চিরকুটটি পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। কে বা কারা ওই চিরকুট বাড়িতে ফেলে গিয়েছে, কিছুতেই বুঝতে পারছেন না। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ।
ভারত-পাক যুদ্ধের আবহে এটা যে দেশের এক সীমান্তরক্ষীর স্ত্রীকে হুমকি, বুঝতে পেরেছেন সুপর্ণাও। এ দিন তিনি বলেন, ‘আমার শ্বশুর-শাশুড়ি চিকিৎসার জন্য গুজরাটে গিয়েছেন। আমার দুই সন্তান থাকলেও ওরা খুবই ছোট। তাই বলতে গেলে বাড়িতে একাই থাকি। ভীষণ ভয় লাগছে।’
সুপর্ণা জুড়লেন, ‘গত শুক্রবার সকালে বারান্দার সামনে পড়ে ছিল দলা পাকানো কাগজটা। উঠোন ঝাঁট দিয়ে ফেলতেও গিয়েছিলাম। পরে লেখা চোখে পড়লে খুলে দেখি এরকম লেখা রয়েছে।’
সুপর্ণার ভাসুর কাজল নাগ বলেন, ‘শুক্রবার রাতে শান্তিপুর থানায় গিয়ে ঘটনা জানিয়েছিলাম আমরা। শনিবার সকালে বৌমা লিখিত অভিযোগ করেছে।’ সুপর্ণা ভয় পেলেও কাজল অবশ্য বলেন, ‘এমনিতে পাড়ায় বা গ্রামে আমাদের কোন শত্রু নেই। তবু আমার মনে হচ্ছে বৌমা বাড়িতে একা রয়েছে জেনে গ্রামের কেউ এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। দেশে যুদ্ধের আবহ রয়েছে বলে এবং বৌমা ভয় পাচ্ছে বলে পুলিশকে বলেছি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য। শান্তিপুর পুলিশ আমাদের আশ্বস্তও করেছে।’
শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ও বিজেপি নেতা চঞ্চল চক্রবর্তী বলেন, ‘ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও দেশ রক্ষার সেনা-বাহিনীর সকলেই আমাদের কাছে সম্মানের। যে বা যারা এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকুক খুবই লজ্জাজনক কাজ। আমরা দলগত ভাবে ওই পরিবারের পাশে আছি। দ্রুত তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুক পুলিশ।’ ব্লক তৃণমূল নেতা সুব্রত সরকারের কথায়, ‘আমরা খোঁজ নিচ্ছি। পরিবার যাতে কোনও ভয় না পায়, সে ব্যাপারে পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলব।’