কলকাতার রুফটপ রেস্তরাঁর নিরাপত্তা খতিয়ে দেখবে পুরসভা, পুলিশ, দমকল এবং আবগারি দফতর
আনন্দবাজার | ১১ মে ২০২৫
মেছুয়া অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যুর ঘটনার পর শহরের রুফটপ রেস্তরাঁগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই প্রেক্ষিতে কলকাতা পুরসভা এ বার শহরের সব রুফটপ রেস্তরাঁয় যৌথ পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই উদ্যোগে যুক্ত থাকছে কলকাতা পুলিশ, দমকল বিভাগ ও রাজ্য আবগারি দফতরও।
নিরাপত্তার দিকগুলি যেমন— ফায়ার লাইসেন্স, আবগারি লাইসেন্স, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, বৈধ নির্মাণ, জরুরি নির্গমনের সিঁড়ি ও লিফ্ট— প্রতিটি দিক খতিয়ে দেখা হবে। যে সব রেস্তরাঁ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি সমন্বয় রেখে এই স্ক্যানিং প্রক্রিয়া চালাবে, এবং তার ভিত্তিতেই কলকাতা পুরসভা তাদের রিপোর্ট হাই কোর্টে পেশ করবে।
প্রসঙ্গত, মেছুয়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরই শহরের সব রুফটপ রেস্তরাঁ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় কলকাতা পুরসভা। তবে সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে রেস্তরাঁ মালিকেরা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। হাই কোর্ট তাতে সাময়িক স্বস্তি দেয়, তবে জানায়, নিরাপত্তার শর্ত মানতে হবে প্রতিটি রেস্তরাঁকে। এই ঘটনার পরই রেস্তরাঁগুলির উপর কড়া নজরদারির সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। শহরের বিভিন্ন বিলাসবহুল রুফটপ রেস্তরাঁ অনেক সময়েই অগ্নিনির্বাপণ ও আইনি শর্ত না মেনে ব্যবসা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষত, ছাদের উপর অবৈধ নির্মাণ, পর্যাপ্ত সিঁড়ি বা লিফ্ট না থাকা, অগ্নিনির্বাপণের যন্ত্র অচল অবস্থায় থাকা— এ ধরনের বহু অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, স্ক্যানিংয়ের পর প্রতিটি রেস্তরাঁকে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা দেওয়া হবে। সেই সময়ের মধ্যে তাদের সমস্ত ঘাটতি পূরণ করতে হবে। অন্যথায়, আইন মেনে রেস্তরাঁ বন্ধ করে দেওয়ার পথও খোলা থাকবে। কলকাতার রেস্তরাঁ ব্যবসা যাতে নিরাপদ, নিয়ম মেনে এবং আইনসম্মতভাবে চলে, তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ বলে জানাচ্ছে প্রশাসন। অন্য দিকে, রুফটপ রেস্তরাঁ নিয়ে হোটেল মালিকদের কথাও শুনতে হবে কলকাতা পুরসভাকে। নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি গৌরাঙ কান্তের নির্দেশ, দু’ সপ্তাহ বন্ধ থাকবে রুফটফ রেস্তরাঁ এবং একই সঙ্গে বন্ধ থাকবে তা ভাঙার কাজ। এই সময়ের মধ্যে হোটেল মালিকদের বক্তব্য শুনতে হবে পুরসভাকে। এই রুফটপ নিয়ে বেশ কয়েকটি রেস্তরাঁর মালিক মামলা করেছেন কলকাতা হাই কোর্টে। সব রুফটপ রেস্তরাঁর ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ মানতে হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি গৌরাঙ কান্ত। তারপরেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে যৌথ নজরদারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।