• এভারেস্ট বেস ক্যাম্প পৌঁছতে মায়ের ‘গাইড’ ছেলে, তালিকায় রয়েছে একাধিক ট্রেক
    এই সময় | ১২ মে ২০২৫
  • তাঁদের তো নির্দিষ্ট কোনও দিন হয় না। প্রতিটি মুহূর্তই তাঁদের আশীর্বাদ নিয়েই পথ চলেন সন্তানরা। কোলেপিঠে করে মানুষ করেন মায়েরা। আর তাঁদের স্বপ্নপূরণে হাত বাড়িয়ে দেন ছেলেমেয়েরা। সেরকমই এক স্বপ্নপূরণের কথা শোনালেন সোনারপুরের বাসিন্দা সোনালি চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ছেলে সাত্যকি চট্টোপাধ্যায়। 

    সোনালি দেবী পেশায় গৃহশিক্ষিকা। সংসারের যাবতীয় কাজ একা হাতে সামলে নেওয়া একজন সাধারণ গৃহবধূ। ছোটবেলা থেকেই ভূগোল বইয়ে এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে পাহাড়ের প্রতি তাঁর ভালবাসা জন্মায়। কিন্তু সংসার ও দায়িত্বের চাপে সেই স্বপ্ন বহু বছর ধরে কেবল ইচ্ছেই থেকে গিয়েছিল। তবে কোভিডের সময় যেন সেই জীবনে এল এক নতুন মোড়। নিজের ছেলে সাত্যকির সঙ্গে অভিযানে তাঁরা সঙ্গে নেননি কোনও গাইড বা পোর্টারও।

    ২০২৫ সালের ১২ এপ্রিল, মা -ছেলে এবং ছেলের এক বন্ধু — এই তিন জন রওনা দেন রাক্সাউলের উদ্দেশে। সেখান থেকে সীমান্ত পার করে পৌঁছন কাঠমাণ্ডু। পরদিন গাড়িতে করে যান সালেরি, সেখান থেকে সুরখে। সুরখে থেকে শুরু হয় মূল ট্রেক। আটদিন ধরে পাথুরে পথ আর হিমালয়ের শ্বাসরোধ করা ঠান্ডা পেরিয়ে তিন জেনে পৌঁছন এভারেস্ট বেসক্যাম্প। সেখান থেকে কালাপাথর অভিযান সম্পূর্ণ করে শুরু হয় নামা, যা শেষ হয় পাঁচদিনে। 

    সোনালি বলেন, ‘ছেলের হাত ধরেই দু’জনে কোনও গাইড, পোর্টার ছাড়াই গিয়েছিলাম এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে। আমার পথচলা এ ভাবেই শুরু।’ মায়ের স্বপ্নপূরণ করতে পেরে খুশি ছেলেও। সাত্যকি বলেন, ‘সম্ভবত গাইড ও পোর্টার ছাড়া কেউ মাকে নিয়ে এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে গিয়েছে। আবহাওয়া ভালো ছিল বলেই এটা করতে পেরেছি।’

    তবে এই অভিযান একদিনে শুরু হয়নি। ২০১৮ সালে মা-ছেলের প্রথম ট্রেক ছিল সান্দাকফু। তারপর একে একে ২০১৯ সালে কেদারকণ্ঠ, ২০২০ সালে পঞ্চকেদার, ২০২১-এ পাঙ্গারচুলা, ২০২৩-এ ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স ও হেমকুণ্ড, ২০২৪-এ অন্নপূর্ণা সার্কিট। ২০২৫-এ এভারেস্ট বেস ক্যাম্প। এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের অভিজ্ঞতা চোখে-মুখে নিয়ে দু’জনেই তৈরি হচ্ছেন পরবর্তী অভিযানের জন্য।

  • Link to this news (এই সময়)