নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: তাপপ্রবাহ চলছে গৌড়বঙ্গজুড়ে। নাস্তানাবুদ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাস্তাঘাট কার্যত শুনশান। তাপপ্রবাহ থেকে নিস্তার পেতে অনেকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরচ্ছেন না। এই অবস্থা থেকে আপাতত রেহাই নেই বলেই আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস। তবে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও হতে পারে। আগামী আরও দু’দিন এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, সোমবার পর্যন্ত রাজ্যে ছুটি থাকায় রাস্তায় বেরিয়ে তাপপ্রবাহের মুখোমুখি হওয়ার হাত থেকে কিছুটা নিস্তার মিলেছে।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে যদি পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হয় এবং তা অন্তত ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকে তবে তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে বলে ধরা হয়ে থাকে। গৌড়বঙ্গে এমনটাই হয়েছে বলে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
মালদহ জেলা আবহাওয়া দপ্তরের আধিকারিক তপনকুমার দাস বলেন, রবিবার মালদহের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় পাঁচ ডিগ্রি বেশি। ১৪ মে পর্যন্ত এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা প্রবল। তবে মাঝেমধ্যে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাতে সামান্য রেহাই মিলতে পারে এই তীব্র দাবদাহ থেকে।
গরমে মালদহের রাস্তাঘাট কার্যত খাঁ খাঁ করছিল রবিবার সকালে। বেলা কিছুটা বাড়তেই রাস্তায় নামেননি অনেকে। এই সময় পর্যাপ্ত জল পান করে শরীরকে আর্দ্র রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরাও।
অসহ্য দাবদাহে পুড়ছে গোটা উত্তর দিনাজপুর জেলা তথা রায়গঞ্জ শহরও। এমন আবহে জেলার জন্য স্বস্তির পূর্বাভাস শোনাল আবহাওয়া দপ্তর। আজ সোমবার থেকে পাঁচদিনের জন্য জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে ঝোড়ো হওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সিকিম আবহাওয়া দপ্তরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, বাতাসের উপরিভাগে বিহার থেকে মণিপুর পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ হয়ে পূর্ব-পশ্চিমে অক্ষরেখা বিরাজমান। তারই প্রভাবে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প ঢুকবে। তৈরি হবে বজ্রগর্ভ মেঘ। যার জন্য সিকিম সহ উত্তরের পাঁচ জেলা ও উত্তর দিনাজপুরের বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সঙ্গে বজ্রগর্ভ মেঘ ও প্রতিঘন্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিমি গতিবেগ ঝোড়ো হওয়া বইবে। যার ফলে আপাতভাবে কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন উত্তর দিনাজপুর জেলাবাসী।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সূর্যের প্রখর রোদে ছুটির দিনে বালুরঘাট কার্যত শুনশান হয়ে গিয়েছিল। সকাল থেকে তাপপ্রবাহ শুরু হয়। দুপুরের পর থেকে শহরের জনবহুল এলাকাগুলি জনমানবহীন হয়ে পড়ে। বালুরঘাট মাঝিয়ান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে খবর, কয়েক দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে রবিবার বাতাসের আর্দ্রতা ছিল প্রায় ৭৫ শতাংশ। আবহাওয়া পর্যবেক্ষক সুমন সূত্রধর বলেন, এপ্রিল মাসে বৃষ্টির ঘাটতি প্রায় ৬৫ শতাংশ। পাখা সারাইয়ের ব্যস্ততা রায়গঞ্জে। - নিজস্ব চিত্র।