নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: এমনিতে গরমের ছুটি পড়ে গিয়েছে স্কুলে। তারউপর রবিবার ছুটির দিন। তবুও সকাল হতেই সেজেগুজে মায়ের হাত ধরে স্কুলে এসেছিল খুদে ছাত্রীরা। উপলক্ষ মাদার্স ডে পালন। সেটাও আবার কিছুটা ব্যতিক্রমী। সন্তানের কাছে মায়ের নানা রূপ। তাই মাকে নিয়ে অনুভূতি কেমন? এমনটা জিজ্ঞেস করলে হয়তো তার সবটা প্রকাশ করা সম্ভব নয় তৃতীয় কিংবা চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে। কিন্তু মাকে ঘিরে তাদের মনে রয়েছে অপরিসীম শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও আনুগত্য। অব্যক্ত সেইসব কথা হয়তো লিখে বোঝাতে সক্ষম খুদেরা। এই ভাবনা থেকে জলপাইগুড়ি সদর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এদিন প্রবন্ধ লেখার আসর বসে। বিষয় ছিল ‘তোমার মাকে নিয়ে তুমিও কিছু লেখো’। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির দু’শোরও বেশি ছাত্রী ওই প্রবন্ধ লেখার প্রতিযোগিতায় শামিল হয়। মাকে ঘিরে নিজেদের অনুভূতি ওই প্রবন্ধের প্রতিটি লাইনে প্রকাশ করে খুদেরা। যা দেখে খুশিতে আত্মহারা হন মায়েরা। ছিল মিষ্টিমুখ, সেল্ফি।
খুদে পড়ুয়াদের মায়েদের কথায়, প্রত্যেক মা তার সন্তানকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। কিন্তু মাকে ঘিরে সন্তানের যে অনুভূতি তা হয়তো সবসময় ছেলেমেয়েরা মুখে বলে বোঝাতে পারে না। সেক্ষেত্রে এদিন খুদেরা মা সম্পর্কে নিজেদের মনের ভাব লিখে প্রকাশ করেছে। কে কত ভালো লিখল, সেটা কোনও বিষয় নয়। যে যেমনই লিখুক না কেন, সেটাই একজন মায়ের কাছে যে কোনও কিছুর চেয়ে বড় পাওনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত মায়েদের হাতে গ্রিটিংস কার্ড তুলে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের মিষ্টি খাইয়ে প্রণাম করে শিশুরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরূপ দে বলেন, মা ও সন্তানের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে এই উদ্যোগ। আমাদের স্কুলে সারাবছর ধরে খুদে প্রতিভা অন্বেষণ পর্ব চলে। তারই অঙ্গ হিসেবে এদিন এই প্রবন্ধ লেখার প্রতিযোগিতা হয়। তবে এর মধ্যে দিয়েও আমরা সমাজে বিশেষ বার্তা দিতে চেয়েছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান বলেন, একটি দিবস পালন বড় কথা নয়। মা ও সন্তানের মধ্যে যে অকৃত্রিম ভালোবাসার মেলবন্ধন, তা যাতে অটুট থাকে, সেটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। এই স্কুল এদিন সেই উদ্যোগ নিয়েছিল। অন্য স্কুলগুলিরও উচিত, এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা। - নিজস্ব চিত্র।