বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস, আর্থিক প্রতারণা, গড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার যুবক
বর্তমান | ১২ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগে কলকাতা থেকে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে শিলিগুড়িতে আনল পুলিস। ধৃত অয়ন দাস গড়িয়ার বাসিন্দা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেক আগে শিলিগুড়ির এক যুবতী কর্মসূত্রে কলকাতায় যান। সেখানে একটি বেসরকারি সংস্থাতে কর্মরত অবস্থায় অভিযুক্ত অয়নের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। এরপর প্রেম। এরমধ্যে প্রায় বছর দু’য়েক আগে শিলিগুড়িতে দু’জনের বদলি হয়। কলকাতায় একসঙ্গে কাজ করার সময় যুবকটি ওই যুবতীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয় বলে অভিযোগ। সেই অছিলায় শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে। গত বছর চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় লগ্নি করতে হবে এই দাবি করে ঋণ নিতে যায় অভিযুক্ত। তবে নথিপত্র দেখে ঋণ প্রদানকারী সংস্থা তাকে ঋণ দেয়নি। এরপরই ওই যুবতীকে নানাভাবে ম্যানেজ করে তাঁর নামে ঋণ নেওয়ার জন্য বাধ্য করে অভিযুক্ত। আগামীতে বিয়ে হবে সেকথা দুই পরিবারের সদস্যরা জানতেন। সেই কারণে প্রেমিককে বিশ্বাস করে নিজের নামে ৮লক্ষ ২৩ হাজার টাকার লোন নিয়ে বসেন ওই যুবতী। কিন্তু ঋণের টাকা হাতে পেয়ে ধীরে ধীরে রূপ বদলাতে শুরু করে অভিযুক্ত অয়ন। এমনই অভিযোগ করেছেন যুবতী। প্রথম প্রথম খারাপ ব্যবহার করার পাশাপাশি ঘন ঘন কলকাতা যাওয়া শুরু হয় অভিযুক্তের। এরপর স্থায়ীভাবে কলকাতায় শিফট করে সে। আর কোনভাবেই ওই যুবতী সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায়নি অভিযুক্ত। এমনকি সে না জানিয়ে কলকাতার একটি মেয়েকে বিয়ে করে নেয় বলে যুবতীর দাবি। অন্যদিকে, ঋণের কিস্তি শোধ করতে রীতিমতো আর্থিক সমস্যায় জড়িয়ে পড়েন ওই যুবতী। বারবার অভিযুক্তর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও বিফল হন। সিদ্ধান্ত নেন, কলকাতায় গিয়ে খোঁজ শুরু করবেন। হাতে নাতে ধরবেন। আর হল তেমনই।
সেখানে গিয়ে অয়নের অন্য মেয়েকে বিয়ে করার খবর জানতে পারেন ওই যুবতী। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই যুবকের বিরুদ্ধে ২২মার্চ শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবতী। অভিযুক্ত তারপর থেকে কার্যত পালিয়ে বেরাচ্ছিল। গা ঢাকা দেওয়ার নতুন নতুন কৌশল নিত। কিন্তু, শেষমেশ পুলিসের জালে ধরা পড়তে হল তাকে। গত শনিবার শিলিগুড়ি থানার পুলিস গোপন সূত্রে তার গতিবিধি জানতে পেরে অভিযানে যায়। গড়িয়ায় গিয়ে গ্রেপ্তার করে আনে অভিযুক্তকে। এরপর আলিপুর আদালতে তুলে ট্রানজিট রিমান্ডে রবিবার অয়ন দাসকে শিলিগুড়ি নিয়ে আসা হয়। এদিন শিলিগুড়ি আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তার পাঁচ দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শিলিগুড়ি থানার পুলিস।
এই প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, আমরা এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছি। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। যুবতীর পক্ষের আইনজীবী সান্নিধ্য দত্ত বলেন, অভিযুক্ত আমার মক্কেলকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করে পরে প্রতারণা করেছে। ওই যুবক আমার মক্কেলকে শুধুমাত্র শারীরিক মানসিকভাবে হেনস্তা করেনি, রীতিমতো আর্থিকভাবেও প্রতারণা করেছে। পুলিস যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। এদিন বিচারক তার পুলিসি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। আমরা অভিযুক্তের কড়া শাস্তি দাবি করছি।